সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন। আমরা অনেকেই আছি সারাদিন আমলের মধ্যে থাকতে পছন্দ করি। কাজকর্মের মধ্যে থাকলেও আমরা আমলের মধ্যেই অনেক সময় থাকি।সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন আজকের বিষয়।

সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন

পোস্ট সূচিপত্রঃআজকের আলোচনার বিষয় সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন। আমল প্রতিদিন কিছু না কিছু আমল করে থাকি। নবীজি বলেছেন সে আমলি শ্রেষ্ঠ ও উত্তম যাহা প্রতিদিনই করে থাকে। সারাদিন আমল সম্পর্কে জেনে নিন বিস্তারিত। কখন কোন সময় কি আমল করবেন আজকে সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন।

সকাল বেলার আমল

সকাল বেলার আমল সম্পর্কে জানব। তাহলে সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন। যে ব্যাক্তি সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস সকালে তিনবার পাঠ করিবে। এটি তার সকল বিষয়ের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। 

সূরা ইখলাসঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। কুল হুয়াল্লাহু আহাদ। আল্লা হুছ ছামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহ কুফুওয়ান আহাদ ।

অর্থঃ বল! আল্লাহ এক। আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নহেন। তিনি কাহারো জন্মদাতা এবং কাহারো জাতও নহেন। আর তাহার সমকক্ষ কেহ নাই। 

সূরা ফালাকঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। কুল আউযুবি রাব্বিল ফালাক। মিন শাররি মা খালাক্ব।ওয়ামিন শাররি গা সিক্বিন ইযা ওয়াক্বাব। ওয়া মিন শাররিন নাফফা ছা তি ফীল উক্বাদ। ওয়া মিন শাররি হা সিদিন ইজা হাসাদ।

অর্থঃ বল! আমি প্রভাতের প্রভুর আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছি। সমস্ত সৃষ্ট বস্তুর অপকারিতা হইতে আর অন্ধকার রাত্রের অপকারিতা হইতে, যখন সেই রাত্র উপস্থিত হয়, আর গ্রন্থী সমূহে ফুৎকারীণী স্ত্রী লোকদের অপকারিতা হইতে, আর শত্রুতা পোষণকারীর অপকারিতা হইতে, যখন সে শত্রুতা আরম্ভ করে।

সূরা নাসঃ স বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। কুল আউযুবি রাব্বিন নাস। মালিকন্নাস। ইলা হিন্নাস। মিন শাররিল ওয়াস ওয়াসিল খান্নাস। আল্লাযী ইউ ওয়াসবিসু ফী সু দূ রিন্নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস।

অর্থঃ বল! আমি মানুষের প্রতিপালক। মানুষের প্রভু, মানুষের মাবুদের আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি, কুপ্ররোচনা দানকারী, পশ্চাদপসরণকারীর অপকারিতা হইতে, যে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দান করে, চাই সে জীন হোক এবং মানুষ।

দ্বিতীয়টি হল, আউজুবিল্লাহিচ্ছ সামিইল আলিমী মিনাশ শাইতানির রাজিম। যে ব্যক্তি সকালে পাঠ করিবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে শয়তান থেকে পানহা দেয়া হবে। দোয়া করার জন্য আল্লাহতালা ৭০ হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করবেন এবং মারা গেলে শহীদের মর্যাদা লাভ হবে। 

দুপুর বেলার আমল

দুপুর বেলার সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন। দুপুর বেলার আমল আপনি যদি আল্লাহ তাআলার নামটি সাতবার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে পড়তে থাকেন আল্লাহতালা আপনার মনের ইচ্ছা গুলো অবশ্যই পূর্ণ করবেন। আল্লাহ তায়ালা এত দয়ান সাগর মহাসাগর যে মানুষের সকল ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষাগুলো আল্লাহ তাআলাই পূরণ করে থাকেন। আপনি যদি নিয়ম মেনে আল্লাহ তায়ালার কাছে চাইতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার মনের আশা পূর্ণ।

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন আয়াতুল কুরসি ফজিলত

দুপুর বেলার আমল আমরা অনেকেই সঠিক নিয়মে জানি না। আমলটি হচ্ছেঃ ইয়ার র হিমাল মাসাকিন।এই দোয়াটি আমরা ৭ বার পড়বো এবং আমাদের মনে যত আশা-আকাঙ্ক্ষা আছে সেটা আল্লাহর কাছে বলব ইনশাআল্লাহ অবশ্যই পূরণ হবে। এ আমলটা করতে হবে ১২টা থেকে ১ঃ৩০মি; মধ্যে এ আমলটি করতে হবে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাআলার আপনার মোনের আশা আকাঙ্ক্ষা গুলো পূরণ করিবে।

বিকেল বেলার আমল

এখন জানবো বিকেল বেলার আমল। সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন বিস্তারিত। আমরা যদি সারাদিন আমলের মধ্যে থাকি তাহলে আল্লাহ তা'আলা অনেক খুশি হবেন। আবার আমরা কাজের মাধ্যমেও এ আমলটি করতে পারব কোন অসুবিধা হবে না। বিকেল বেলার আমলটি হল আল্লাহর ৯৯ টা নাম পরিবে। হাতে তাসবিহ রেখে আল্লাহর ৯৯ টা নামের মধ্যে যে কোন নাম দিয়ে পড়তে থাকতে হবে।

আরো পড়ুনঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে কি হয়

আমরা যদি আল্লাহতালা ৯৯ টা নাম পাঠ করতে থাকি আল্লাহ তায়ালা আমাদের বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করিবে, ইনশাআল্লাহ। এবং সারা দিনের সময় টা ভালো কাটবে। সংসারে অভাবনতন থাকলে তা দূর হইবে। আল্লাহ তাআলার কে যখন বান্দা ডাকে আল্লাহ তা'আলা না সারা দিয়ে থাকতে পারে না, বরং আল্লাহ তায়ালা অনেক খুশি হন।

সন্ধ্যা বেলার আমল

সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন, এখন জানবেন সন্ধ্যেবেলার আমল সম্পর্কে। যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এ দোয়া পড়বে আল্লাহ তাআলার  সকাল পর্যন্ত তার গুনহা মাফ করে দেবে। নিচে দোয়াটি উল্লেখ করা হলো।

দোয়াঃ আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিয়াল্লাহু লা উশরিকা বিহী শাইয়াও ওয়া আসহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় ৭ বার করে নিম্নের দোয়া পাঠ করিবে, আল্লাহ তাআলা তার দুনিয়া ও আখেরাতের সকল পেরেশানির জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবেন। নিচে দোয়াটি দেয়া হল-

দোয়াঃ হাছবিইয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু হুওয়া রব্বুল আরশিল আযীম।

যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় ১০ বার নিম্নের কালিমা পরিবে তার জন্য ১০ টি নেকি লেখা হবে, তার আমলনামা হতে দশটি গুনহা মুছে ফেলা হবে। সে ১০ টি গোলাম আযাদ করার সোওয়াব পাবে এবং সেদিন রাতে শয়তান থেকে নিরাপদ থাকবে। নিচে দোয়াটি উল্লেখ করা হলো-

দোয়াঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াহদাহু ওয়াহ দাহু লা শাড়িকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুওয়া আল কুল্লি শাইয়িং কদির ।

রাতের বেলার আমল

রাতের বেলার আমল বিষয়ে জেনে নিন। আমরা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কম বেশি সবাই আমল করি। শরিয়ত ও হাদিসের আলোতে রাতের বেলার আমল ও সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন। 

১। দুই হাতের তালু একত্র মিলে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়ে হাতের তালুতে ফু দেবে। এরপর দুই হাতের তালু দ্বারা দেহে মাসুয়া করবে। মাসুয়া আরাম্ভ করবে মাথা মুখমন্ডল ও দেহের সামনের দিক থেকে এভাবে তিনবার করবেন।

২। আমাদের নবীজি বলেছেন যে ব্যক্তি ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পড়বে শয়তান সারারাত তার আশে পাশে যাবে না। 

৩। হযরত মুহাম্মাদ সাঃ বলেছেন যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বে এটা তার জন্য যথেষ্ট।

৪। প্রিয় নবী আরো বলেছেন সূরা কাফিরুন পাঠ করলে বিপদ থেকে মুক্তি পেতে উপকারী।

৫। রাসূল সাঃ এর যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতো তখন ডান হাতটি গালের নিচে রেখে ঘুমাতেন তখন এই দোয়াটি পড়তেনঃ আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতূ ওয়া আহ ইয়া।

অর্থঃ হে আল্লাহ আপনার নাম নিয়ে আমি ঘুমাচ্ছি এবং আপনার নাম নিয়ে জীবিত হব। 

৬। যে ব্যক্তি সুরা মুলক পাঠ করিবে, আল্লাহ তাআলা তার কবরের আজাব থেকে রক্ষা করিবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url