যিনা কাকে বলে - যিনা থেকে বাঁচার দোয়া

আজকের পোস্টে থাকছে যিনা কাকে বলে ও যিনা থেকে বাঁচার দোয়া। যিনা হলো পর নারীর সাথে মেলামেশা করা। কিন্তু এগুলো ছাড়াও এমন কাজ রয়েছে যেগুলোকে হাদিসের মধ্যে যিনা বলা হয়েছে।অনেক মানুষ এগুলো থেকে বাঁচেনা আবার এগুলোকে পাপও মনে করে না।
যিনা কাকে বলে

পোস্ট সূচিপত্রঃএটা কত বড় যে পাপ সেটা আজকের বিষয়ে বলব যিনা কাকে বলে ও যিনা থেকে বাঁচার দোয়া সম্পর্কে।দুই চক্ষুর যিনা হচ্ছে কোন পর নারীকে দেখা। দুই কানের যিনা হচ্ছে সে সম্পর্কে খারাপ কিছু শোনা।জিব্বার যিনা হচ্ছে ওই সম্পর্কে কিছু বলা। পুরো শরীরের খারাপ কিছু করলে সেটাকে যিনা বলে।

গোপনে যেনা করলে তিনটি বিপদ আসবে

আজকের আলোচ্য বিষয়ে থাকছে যিনা কাকে বলে। গোপনে যিনা করলে এ তিনটি বিপদ থেকে আপনাকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে চেনার শাস্তি হিসেবে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। গুনাহের সাথে বেশ কিছু বিধান আরোপ করেছেন। যেমন যিনাকারী তওবা না করা পর্যন্ত তাকে বিয়ে করতে দেওয়া হবে না। এই গুনাহের কারণে তাকে আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেওয়া হবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম শাস্তির কিছু বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। জাহান্নামের একটি চুল্লিতে ব্যভিচারি উলঙ্গ অবস্থায় পর নারীকে একত্রিত করবেন। সেখানে জাহান্নামের আগুনে তাদেরকে পুরানো হবে ও তাদের বিকট শব্দ শোনা যাবে। সূরা মুহাম্মদের ১২ নং আয়াতে মহান আল্লাহতালা বলেন, তারা খাদ্য ভক্ষণ করে ও আনন্দ উপভোগ করে। যেমন আনন্দ উপভোগ করে চতুষ্পদ জানোয়ার। অর্থাৎ মানুষ ও জানোয়ারের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ তওবার নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানুন

কিন্তু যিনাকারী এবং জানোয়ারের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। যৌন উত্তেজিত নেশায় সে সাধারণ মানবিক লজ্জা হারিয়ে ফেলে। বৈধ অবৈধ এর মধ্যে কোন আর পার্থক্য থাকে না। এ বিষয়ে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি যেনাই লিপ্ত হয় তাকে অবশ্যই ভয়ঙ্কর তিনটি শাস্তি মুখোমুখি হতে হবে। তাহলে চলুন তিনটি শাস্তি বিষয়গুলি জেনে নিন।

১। সে ব্যক্তি অনেক ধরনের রোগে আক্রান্ত হবে। আবার অনেক বড় বড় ধরনের রোগের আক্রান্ত হবে তার চিকিৎসা মিলবে না। আর সেই রোগ থেকে সে ব্যক্তি আরোগ্য লাভ করতে পারবে না। যার চূড়ান্ত পরিনতি হচ্ছে ওই রোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হবে। এবং মৃত্যুর সময় কঠিন কষ্ট ও যন্ত্রণা পাবে।

২। যে ব্যক্তি যিনা করবে তার শরীরে এমন একটি রোগ আল্লাহতালা দিয়ে দিবেন যা তার বংশের মধ্যে কারো নেই। এমন একটি রোগ তাকে ধীরে ধীরে আক্রান্ত করে ফেলবে। যে রোগের চিকিৎসা কোন ডাক্তার দিতে পারবে না।

৩। যে ব্যাক্তি যিনা করবে তার দরিদ্র দেখা দিবে অভাব দেখা দিবে। সে এত কঠিন অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে যে তার পরিমাণ অত্যন্ত ভয়াবহ হবে।

হাদিসের শেষ অংশে বলা হয়েছে যে, জীবনের শেষ পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি হবে তাকে মানুষের দরজায় ভিক্ষা করতে হবে।

তোমরা যিনার ধারের কাছেও যেও না

যিনা কাকে বলে এ বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। এখন জানাবো তোমরা যিনার ধারের কাছেও যেও না। যিনা ব্যভিচারের ধারের কাছেও যেয়ো না নিশ্চয়ই তা হচ্ছে অশ্লিল কাজ। আর অতি জঘন্য পথ। আর তোমরা সেই নাফসাকে হত্যা করো না। যা আল্লাহ হারাম করেছেন সঙ্গত কোন কারন ছাড়াই। কেউ অন্যায়ভাবে নিহত হলে আমি অধিকার দিয়েছি তার উত্তরাধিকে প্রতিশোধ গ্রহণের।সুতরাং হত্যার ব্যাপারে সে সীমা লংঘন করবে না।

নিশ্চয়ই সে হবে সাহায্য প্রাপ্ত। তোমরা ইয়াতিমের সম্পদের কাছে যেওনা। 

যিনা থেকে বাঁচার দোয়া

আজকে আলোচনা বিষয় ছিল যিনা কাকে বলে। এখন আমরা জানবো যিনা থেকে বাঁচার দোয়া। নিচে দোয়াটি উল্লেখ করা হলো-

দোয়াঃ কুলিল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিং শাররি সামঈ, ওয়ামিং শাররি বাচোরী ওয়ামিং শাররি লিসানী ওয়ামিং শাররি ক্বলূবী ওয়ামিং শাররি মানিইই।

আরো পড়ুনঃ সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রাণের অশ্লীল শ্রবণ, চোখের কুদৃষ্টি, জিব্বা কুবাক্য, অন্তরের কপটতা ও কামনার অনিষ্টতা হতে আশ্রয় চাই। 

যিনার গুনাহ কি মাফ হয়

শয়তানের পাল্লায় পরে মানুষ বারবার খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে যায়। তবে মানুষ যতই গুনাহ কাজ করুক না কেন আল্লাহতালা সব সময় তওবার দরজা খুলে রেখেছেন। কোরআন ও হাদিসে বারবার তওবা ও ইস্তেগফার করতে বলা হয়েছে। পবিত্র কোরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবা কারীদের ভালোবাসেন। আর তাদেরকেও ভালবাসেন যারা পবিত্র থাকে। আরো বড় হয়েছে তোমরা নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কারো।

একই কাজ যদি বারবার করা হয়, তাহলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই ক্ষমা করবেন কিন্তু অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে পরীক্ষা নিবেন। গুনা হয়ে গেলে স্বাভাবিক ভাবে মানুষ অনুতাপে ভোগেন। মানুষের সব সময় শয়তানের ধোকার হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করা। আল্লাহ তায়ালার কাছে এমন ভাবে ক্ষমা প্রার্থী চাওয়া যেন আল্লাহ কবুল করে নেয়।

আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা কবুল হওয়ার জন্য যেগুলো মানতে হবে তা হচ্ছে, ১. পাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে। ২. পাপ সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে। ৩. ওই পাপ আগামীতে দ্বিতীয় বার না করার দৃঢ় সংকল্প করতে হবে।

শেষ কথার আলোচনাঃ যিনা কাকে বলে - যিনা থেকে বাঁচার দোয়া

প্রিয় পাঠক আজকের আলোচনায় ছিল যিনা কাকে বলে, যিনা থেকে বাঁচার দোয়া, যিনার গুনাহ কি মাফ হয়, গোপনে যেনা করলে তিনটি বিপদ আসবে, আমরা যিলার ধারের কাছেও যেও না এসব সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। প্রকৃতির একটা মার আছে একথা সবাই জানে। আশা করি আপনাদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে পাপ কাজ করলে আল্লাহ তা'আলা শুধু আখিরাতে শাস্তি তো দেবেন এবং এই দুনিয়াতেই আপনাকে প্রাপ্ত শাস্তি দেবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url