তওবা নামাজের নিয়ম - তওবা নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে জানুন
পাপ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহ তাআলা বিধান দিয়েছেন তওবা নামাজ পড়ার
জন্য। আর তাই আজকের এই আর্টিকেলটি তওবা নামাজের নিয়ম ও তওবা নামাজের
গুরুত্ব সম্পর্কে জানুন। অনেকে আছে এই সম্পর্কে জানেন না তওবা নামাজের নিয়ম
ও তওবা নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে জানুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃআপনারা যারা তওবা নামাজের নিয়ম তওবা নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে জানুন এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। নিচে তওবা নামাজের নিয়ম তওবা নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে জানুন আলোচনা করা হলো।
তওবা নামাজ পড়ার ফজিলত
তওবার নামাজের ফজিলত নবীজি (সা.) নিজে উম্মতের পাপমুক্তির জন্য তওবার নামাজের বিধান রেখে গেছেন। এ তওবার নামাজ গুনাহ মার্জনার শ্রেষ্ঠ উপায়। কারণ উম্মতরা নিষ্পাপ নয়। তাদের মধ্যে অন্যায়, অবিচার, অপরাধ ইত্যাদি সংঘটিত হবে, কিন্তু সেই অপরাধ থেকে তওবা বা তওবার নামাজের মাধ্যমে নিজের কৃত মন্দ কাজের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাইতে হবে।এ নামাজ হলো বান্দার পাপমুক্তির চাবিস্বরূপ।
আরো পড়ুনঃ কোন দোয়া পড়লে মনের আশা পূরণ হয়
এ মর্মে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন কোনো গুনাহ করে ফেলে, অতপর সে দাঁড়িয়ে ওজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তখন আল্লাহ তায়ালা অবশ্য তাকে ক্ষমা করে দেন।তারপর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই আয়াতটি পাঠ করলেন, মুত্তাকি তারাই, যারা কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা কোনো মন্দ কাজে জড়িয়ে নিজের ওপর জুলুম করে বসলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।’ (তিরমিজি : ৪০৮)
এমনকি নবীজি দৈনিক একশবার তওবা করতেন। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, ‘হে মানব জাতি! তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা কর। নিশ্চয় আমি দৈনিক একশবার তার নিকট তওবা করি।’ (মুসলিম : ৭০৩৪)। রাসুল আরও বলেন, ‘গুনাহ থেকে তওবাকারী ওই ব্যক্তির ন্যায়, যার কোনোই গুনাহ নেই।’ (ইবনে মাজাহ : ৪৩৯১)
আল্লাহ তায়ালা মহান করুণাময় ও শ্রেষ্ঠ দয়ালু। তিনি বান্দাকে জাহান্নামের জ্বলন্ত আগুন থেকে বাঁচানোর জন্য তওবার বিধান রেখেছেন। যাতে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করে পাপমুক্ত হতে পারে এবং দোজখের আজাব থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে।আল্লাহ তাআলার এমন কোন বান্দা নেই যে তার গুনহা নেই তাই আমাদের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য অবশ্যই আমাদের সালাতুল তাওবা নামাজ আদায় করা জরুরী।
তওবা নামাজ পড়ার নিয়ম
এই তওবা নামাজ জীবনে একবার পড়লে আপনার সকল গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। এই নামাজ পড়ার জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। তবে মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য গভীর রাতে পড়া উত্তম। আপনাদের যদি অনেক গুনা হয়ে থাকে বা ভুলবশত গুনহার কাজ করে ফেলেন অতীতের গুনাহ যদি থাকে তাহলে আপনি তওবা নামাজ তওবা নামাজ পড়ুন।
আরো পড়ুনঃ মেয়ে শিশুর ইসলামিক নাম অর্থসহ
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার মতো এভাবে অজু করবে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে এবং এর মাঝখানে দুনিয়ার কোনো খেয়াল করবে না, তার আগের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ -সহিহ বোখারি : ১৫৯
নামাজ শেষে আল্লাহর তাসবিহ তাহলাল পড়বে, আল্লাহর প্রশংসা করবে এবং ইস্তেগফার পড়ে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করবে।
তওবার নামাযের দোয়া-
তওবার শ্রেষ্ঠ দোয়া হলো- সাইয়েদুল ইস্তিগফার। তা হলো- ‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খলাকতানি, ওয়া আনা আবদুকা, ওয়া আনা আলা আহদিকা, ওয়া ওয়া‘দিক মাসতাতা‘তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানা‘তু, আবু-উ লাকা বিনি‘মাতিকা আলাইয়া ওয়া আবু-উ বিজাম্বি ফাগফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আমার রব, আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আমাকে আপনি সৃষ্টি করেছেন, আমি আপনার বান্দা। আমি যথাসাধ্য আপনার সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকব। আমি আমার নিকৃষ্ট আমল থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই, আপনার যে অসংখ্য নেয়ামত ভোগ করছি এ জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। আমি আমার কৃত অপরাধ স্বীকার করছি। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনি ছাড়া অপরাধ ক্ষমা করার কেউ নেই। -সুনানে আবু দাউদ : ৫০৭০
তওবা নামাজ পড়ার নিয়ত
প্রত্যেক নামাজে নিয়ত রয়েছে অবশ্যই নিয়ত করার জরুরি। আপনি তওবার নামাজ পড়লে অবশ্যই তওবার নামাজের নিয়ত বাধতে হবে। তওবার নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জেনেছেন এবার তওবা নামাজ পড়ার নিয়ত সম্পর্কে আলোচনা করা হল-
নিয়ত- নাওয়াইতুয়ান উসাল্লিয়া ল্লিলাহি তা'আলা রাকাআতিল সালাতিল নফলি মোতাওয়াজ্জিহান ইল্লা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবর।
আরো পড়ুনঃ সারাদিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন
অর্থ- আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করছি আল্লাহু আকবার।
এই নিয়তটি যারা আরবিতে পারবেন না তারা সালাতুত তওবা নামাজের নিয়তে তাকবীরে তাহরিমা আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়িয়ে পড়বেন।
তওবা নামাজ কয় রাকাত
কাতপ্রতিটা নামাজের যথার্থ নিয়ম এবং রাকাত রয়েছে। সাধারণত তওবা নামাজ একটি নফল ইবাদত। তাই তওবা নামাজ দুই রাকাত করে আদায় করতে হয়। আজকের আর্টিকেলে তওবার নামাজের নিয়ম এবং তওবা নামাজ কয় রাকাত অথবা নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
তওবা নামাজ সুন্নত নাকি নফল
আল্লাহ তাআলা আমাদের এই দুনিয়াতে পাঠিয়েছে অবশ্যই তার ইবাদত করার জন্য। কিন্তু আমরা মানুষেরা পাপ কাজের সাথে জড়িয়ে যায়। অতীতে বা ভবিষ্যতে অনেক বড় বড় পাপ করে থাকি। এ পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবশ্যই তওবা নামাজ পড়তে হবে। তওবা নামাজ হলো নফল নামাজ। আমাদের গুনাহ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য তওবা নামাজের বিধান দিয়েছেন আল্লাহ তা'আলা।
শেষ কথা তওবা নামাজের নিয়ম - তওবা নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে জানুন
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে তওবা নামাজের নিয়ম, তওবা নামাজের গুরুত্ব, তওবা নামাজের নিয়ত, তওবা নামাজ সুন্নত নাকি নফল এই বিষয়গুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই পড়ে নিবেন। এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url