ইস্তেখারার নামাজ কেন পড়ে - ইস্তেখারার নামাজ পড়ার নিয়ম

ইস্তেখারার নামাজ কেন পড়ে অথবা ইস্তেখারার নামাজ পড়ার নিয়ম এই সম্পর্কে কি আপনি জানতে চান? তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন এখানে ইস্তেখারার নামাজ কেন পড়ে এবং ইস্তেখারার নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। 

ইস্তেখারার নামাজ কেন পড়ে

পোস্ট সূচিপত্রঃঅনেক ধরনের নামাজ আছে তার মধ্যে রয়েছে ইস্তেখার নামাজ। এ নামাজ সম্পর্কে আমরা অনেকেই কমবেশি জানি আবার জানিও না। তাই আজকে যে খারাপ নামাজ কেন পড়ে এবং কখন পড়তে হয় এবং পড়ার নিয়ম কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো।

ইস্তেখারার নামাজ কেন পড়ে

অনেকেই জানতে চায় ইস্তেখারা নামাজ কেন পড়ে। ইস্তেখারা শব্দের অর্থ হল কল্যাণ চাওয়া ও কল্যাণ কামনা করা। কোন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে না পারা ও বিপদজনক এ বিষয়ে স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে পরামর্শ তলব করা।

হাদিসের ভেতরে এসেছে ৬৩৮২ নাম্বার হাদিস (সহীহ বুখারীতে)

আল্লাহ রাসুল সাঃ তিনি বলেন, ইস্তেখারার দোয়া, ইস্তেখারার নামায। ইস্তেখারার যে দোয়াটি এটি কুরআনের যে সূরা গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষা দিয়েছ, সেভাবে এই ইস্তেখার দোয়া আমাদের সেভাবে শিক্ষা দিয়েছে।

এর উদ্দেশ্য কোন সিদ্ধান্ত নিতে হলে, যেকোনো ভালো কাজের সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে গেছেন। কাজটা আপনার জন্য করলে ভালো হবে কিনা উপকার হবে কিনা। ব্যবসা ভালো হবে কিনা, সেই ছেলেটাকে বিয়ে করলে ভালো হবে কি না, বা ঐ মেয়েটাকে বিয়ে করলে ভালো হবে কিনা।

আরো পড়ুনঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফজিলত ও উপকারিতা

এইসব চিন্তাটা আল্লাহর কাছে জেনে নেয়ার জন্য ইস্তেখার করা হয়।যাতে আল্লাহ তাআলা আপনাকে সঠিক পরামর্শ দেবে।  ইস্তেখারার আপনি টানা সাত দিন করতে পারেন। আল্লাহতালা আপনার স্বপ্নের মাধ্যমে হোক অথবা আপনার মনের ভেতরে প্রবল ইচ্ছা ও সিদ্ধান্ত এসে যাবে।

ইস্তেখারার নামাজ পড়ার নিয়ম

ইস্তেখারার সালাত দুই রাকাত এটি নফল নামায। দুই রাকাত নামাজ পড়বে ফরজ নামাজের ব্যতীত স্বাভাবিক নফল নামাজের মতই। দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে অতঃপর ইস্তেখারে যে দোয়া রয়েছে সে দোয়াটি পড়ুন। একান্ত তার সহিতে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করিবে। নামাযান্তে মনোযোগ সহকারে দোয়া পাঠ করিয়া পবিত্র স্থানে অথবা বিছানায় কেবলামুখী নইলে কাত হয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে যেতে হবে।

ইনশাল্লাহ আপনি যে বিষয়ে ইস্তেখার করিবেন স্বপ্নের যুগে ইঙ্গিত পাইবেন অথবা মনে প্রবল সিদ্ধান্ত নেবার আত্মবিশ্বাস চলে আসবে। ইস্তেখার নামাজটি ৭ দিন পর্যন্ত টানা পড়ুন। এতে অবশ্যই ভালো ফল পাইবেন।

ইস্তেখারা নামাজ পড়ার নিয়ত

ইস্তেখারা নামাজ কেন পড়ে আজকের আলোচ্য বিষয় এখন আমরা জানবো ইস্তেখারা নামাজ পড়ার নিয়ম।
ইস্তেখারার নামাজ এর নিয়ত-
নাওয়াইতুআন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকয়াতাই ছালাতিল ইস্তিখারাতি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল্ কা'বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার ।
বাংলা নিয়ত-
আমি কেবলামুখী হয়ে দাঁড়াইয়া আল্লাহর ওয়াস্তে দুই রাকয়াত। ইস্তেখারার নামায পড়িতে নিয়ত করিলাম।

ইস্তেখারা নামাজের সময়

ইস্তেখার নামাজ কেন পড়ে ইস্তেখারা নামাজের সময় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। ইস্তেখারা নামাযের নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। অনেকেই মনে করে রাত্রে ঘুমানোর আগে ইস্তেখার করে ঘুমাতে হয় তাহলে স্বপ্নে দেখে আসলে এমনটা না।
এরকম কোন বাধ্যকতা নেই। বরং যে সময়টাতে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয় সে সময় গুলোতে আপনি ইস্তেখারা করতে পারেন। ইস্তেখারা নামাজের জন্য কোন নির্ধারিত সময় নেই।

ইস্তেখারা নামাজের দোয়া

ইস্তেখারার নামাজ কেন পড়ে ইতিমধ্যে জেনে এসেছি। এখন জানবো ইস্তেখারা নামাজের দোয়া বিষয়ে।

ইস্তেখারার দোয়া-

আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসতাখীরুকা বি'ইলমিকা ওয়া আস্তাক্বদিরুকা বিকুদরাতিকা ওয়া আসাআলুকা মিন ফাদলিকাল আযীম। ফাইন্নাকা তাক্বদিরু ওয়ালা আক্বদিরু, ওয়া ত'লামু ওয়ালা আলামু , ওয়া আনতা আল্লামূল গুয়ূব। আল্লা-হুম্মা ইন কুনতা ত'লামু আন্না হা-যাল আমরাখাইরুন লী ফী দীনি ওয়া মা'আ-শি ওয়া আক্বিবাতি আমরি, ফাকদুরহু লী, ওয়া ইয়াসসিরহু লী, ছুম্মা বা-রিক লী ফী-হি।


ওয়া ইন কুনতা তা'লামু আন্না হাযাল আমরা শাররুন লী ফী দিনী ওয়া মা আ-শী ওয়া আ-ক্বিবাতি আমরি,ফাসরিফহু আন্নী ওয়াসরিফনী আনহু,ওয়াকদুর লিয়াল-খাইরা হাইসু কা-না,সুম্মা আরদ্বিনী বিহ।
অর্থ-
হে আল্লাহ ! আমি আপনার জ্ঞানের সাহায্যে আপনার নিকট পড়লাম কামনা করছি। কুদরতের সাহায্যে আপনার নিকট সত্যি এবং আপনার নিকট শক্তি কামনা করছি এবং আপনার মহান অনুগ্রহের প্রার্থনা করছি। কেননা আপনিই শক্তিধর, আমি শক্তিহীন। আপনি জ্ঞানবাদ, আমি জ্ঞানহীন। এবং আপনি গায়েবী বিষয়ে সম্পর্কে মহাজ্ঞানী।
হে আল্লাহ ! এই কাজটি যদি আপনার জ্ঞান অনুযায়ী যদি আমার দীন, আমার জীবিকা এবং আমার কাজের পরিণতির দিক দিয়ে অথবা বলেছেন ইহকাল বা পরকালের জন্য কল্যাণকর হয়, তবে তা আমার জন্য নির্ধারিত করুন এবং তাকে আমার জন্য সহজলভ্য করে দিন, এরপর তাতে আমার জন্য বরকত দান করুন। 

আর এই কাজটি যদি আপনার জ্ঞান অনুযায়ী যদি আমার দীন, আমার জীবিকা এবং আমার কাজের পরিণতির দিক দিয়ে অথবা বলেছেন ইহকাল বা পরকালের জন্য ক্ষতিকর হয়, তবে আপনি আমাদের তা থেকে দূরে সরিয়ে রাখুন এবং যেখানে কল্যাণ থাকুক আমার জন্য সেই কল্যাণ আমার জন্য নির্ধারিত করে দিন। অতঃপর তাতেই আমাকে সন্তুষ্ট রাখুন। (বুখারী ৭/১৬২ নং ১১৬)

বিয়ের জন্য ইস্তেখারার দোয়া

ইস্তেখারার নামাজ কেন পড়ে ও বিয়ের জন্য ইস্তেখারার দোয়া এই বিষয়র আলোচনা করা হবে। রাতে ঘুমানোর পূর্বে যে বিয়ে করবে বিয়ের জন্য দুই রাকাত ইস্তেখারা নামাজ পড়বেন। এবং কিছু দোয়া আছে সে দোয়া পরতে হবে।
দোয়া-
আল্লাহুম্মা খিরলী ওয়া আখতারলি।

এই দোয়াটি আপনি পাঠ করেন, পাঠ করার পর ঘুমিয়ে পড়েন আল্লাহতালার আপনাকে স্বপ্নের মাধ্যমে দেখাবে এখানে বিয়ে করা ভালো হবে নাকি খারাপ হবে। অথবা আপনার মন সে দিকে ঝুকবে যে এই কাজটা ভালো হবে এই কাজটা করুন। আর যদি আপনার জন্য মন্দ হয় তাহলে আপনার মন সেদিকে শাহী দেবে না।

আল্লাহতালার কাছে বেশি বেশি সাহায্য চাইবেন এবং মঙ্গল প্রার্থনা করবেন। তাহলে আল্লাহ তাআলা আপনাকে অবশ্যই সাহায্য করবে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url