জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত

আজকের আলোচনার বিষয়ে থাকছে যে জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত সম্পর্কে।প্রতিটি মুসলমানের জানা দরকার জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত সম্পর্কে। এই আমলগুলো করলে আল্লাহ তা'আলা প্রতিটি বান্দার উপর ফজিলত দান করবে।

জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত

পোস্ট সূচিপত্রঃআপনি যদি আল্লাহ ত'আলার সঠিকভাবে আমল করতে চান তাহলে জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত সম্পর্কে জেনে নিন। নিচে জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত উল্লেখ করা হল।

জিলহজ্জ মাসের গুরুত্ব কি

জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত এবং জিলহজ মাসের গুরুত্ব কি আজকে আলোচনার বিষয়ে থাকছে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, এই দশ রাতের শপথ নিয়ে এই দশ দিনের মর্যাদা জিলহজ্ব মাসে তুলে ধরেছে। অন্যান্য মাসের চেয়েও জিলহজ মাস আল্লাহ তায়ালার কাছে অত্যন্ত শ্রেষ্ঠ মাস।

হাদিসে এসেছে, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) আনহু বর্ণনা করেন

রাসূল সাঃ বলেছেন, এই দিনগুলোর আমলে কোন তুলনা হয় না। কেননা এর থেকে শ্রেষ্ঠ কোন আমল আর নেই। অতঃপর আল্লাহর রাসূলকে প্রশ্ন করা হলো, জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল কি জিহাদের থেকেও শ্রেষ্ঠ? রাসূল সাঃ বললেন, জিহাদ ও না, তবে যে ব্যক্তি নিজের জানের শঙ্কা ও সম্পদ নিয়ে বের হয়েছে অতঃপর কিছু নিয়েই ফিরে আসেনি।

আরো পড়ুনঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফজিলত ও উপকারিতা

অর্থাৎ, যে ব্যক্তি জিহাদে গিয়ে শহীদ হয়েছে তার মর্যাদা শ্রেষ্ঠ। কিন্তু যারা জিহাদে গিয়েছে তাদের থেকেও জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল শ্রেষ্ঠ সুবহানাল্লাহ। 

রাসূল সাঃ বলেছেন, এ মাসটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার অন্যতম কারণ হলো, এই মাসে হজ্জ তথা ইয়াওমেহ আরাফাহ অনুষ্ঠিত হয়।হাদিসে আরাফার ময়দানে উপস্থিত হওয়াকে হজ বলা হয়েছে।

তাছাড়া কেউ যদি নয় জিলহজ্জ আগে মুহূর্তের জন্য হলেও আরাফার ময়দানে উপস্থিত না হয় তবে তার হজ্জ পালন হবে না পরবর্তী বছর আবার তাকে হজ আদায় করতে হবে। এবং হজ করার সাথে কুরবানি ও করতে হবে। ফজিলতপূর্ণ এ দুটি কাজ মর্যাদা পূর্ণ মাস রমজানেও আদায় করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ।

জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল ও ফজিলত

জিলহজ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত জানাবো আপনাদের জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে। এই দশটি দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ আল্লাহতালা পছন্দনীয় এই ১০ দিনের আমল। যত মৌলিক এবাদত আছে সেটা জিলহজ্জ মাসে করা হয় অন্য কোন মাসে করা হয় না।

জিলহজ্ব মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো-

১) প্রথম দশ দিন নখ ও চুল না কাটা। মানে প্রথম দশ দিন নখ ও চুল কাটা যাবে না।

২) জিলহজ এ প্রথম ৯দিন রোজা রাখা বিশেষত আরাফাতের দিনে রোজা রাখা। 

৩) বেশি বেশি নফল ইবাদত করা।

৪) আন্তরিকভাবে তওবা করা।

৫) বেশি বেশি পরিমাণে আল্লাহর জিকির করা।

৬) সামর্থ হলে হজ্জ ও ওমরা করা।

৭) কোরবানি করা।

৮) বেশি পরিমাণে তাকবির পাঠ করা।

৯) যথা সম্ভব সকল গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা।

১০) সাদকাহ করা।

হাজ্জের এই প্রথম দশকের ইবাদত বন্দেগী নেক আমল এটা আল্লাহতালার কাছে যত প্রিয় এবং পছন্দনীয় অন্য কোন সময়ে আল্লাহ তাআলার কাছে এত বেশি পছন্দ নিও নয়। জিলহজের প্রথম দশকের এ আমল সবচাইতে শ্রেষ্ঠ এবং মর্যাদাবান। এই দশকেই মর্যাদার কারণ হল এই দশকে সমস্থ ইবাদতের সমাহার রয়েছে।
এই দশকে ঈমান অন্য সময়ের মত থাকে, ৫ ওয়াক্ত সালাত অন্য সময়ের মত থাকে, যাকাত  এই দশকে আদায় করা হয়।  এই দশকে রোজা রাখতে হয় সীয়াম পালন করতে হয়।  এই দশকে হজ্জ ও কোরবানি করতে হয়। অনেকগুলো ইবাদতের সমাহার  এই দশকে রয়েছে। সেই জন্য আল্লাহ তা'আলার কাছে এর গুরুত্ব এতো বেশি।

জিলহজ্জ মাসের ১০ রোজা রাখার ফজিলত কি

জিলহজ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত। জিলহজ মাসের ১০ রোজা রাখার ফজিলত কি এর সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। 

রাসুল সাঃ বলেছেন, এই আরাফের দিনে আমাদের বিশেষ করণীয় হচ্ছে, আরাফার দিনের ৯ই জিলহজ্জের রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি, তিনি এর এক বছর আগে ও এক বছর পরে গুনহা মাফ করে দেবেন। 
এটা হল ৯ই জিলজ্জের রোজা রাখার গুরুত্ব ও ফজিলত।
জিলহজ্ব মাসের অন্যান্য যেগুলো রোজা আছে সেটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। জিলহজ্জ মাসে প্রথম দশক অর্থাৎ, ঈদের দিন ব্যতীত বাকি নয় দিন রোজা রাখার বিশেষ ফজিলতও হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।হযরত হাফসা (রা:) বর্ণনা করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা এবং প্রত্যেক মাসের তিন রোজা কখনও ছাড়বেন না। 

সারা বেশি সওয়াব অর্জন করতে চান তারা এক থেকে দশ পর্যন্ত রোজা রাখবে। আর যারা পারবেন না তারা শুধু ৯ জিলহজের রোজা রাখবেন শুধু একটি রোজা।

এর সওয়াবগুলো হলো-

হযরত এরশাদ সাঃ করিয়াছেন, যে ব্যক্তি জিলহজ্ব মাসের প্রথম দিন রোজা রাখে, সে যেন এক ঘন্টাও বিনা বিশ্রামে একাধারে ২০০০ বৎসর ধরিয়া আল্লাহর পথে জিহাদ করিল। যে ব্যক্তি এই মাসে তৃতীয় দিন রোজা রাখে, সে যেন হযরত ইসমাইল (আঃ) এর বংশের তিন হাজার গোলাম আজাদ কোরিয়া দিল।

যে ব্যক্তি এই মাসে চতুর্থ দিন রোজা রাখে, সে যেন চারশত বছর আল্লাহর ইবাদত করিল। যে ব্যক্তি এই মাসে পঞ্চম দিন রোজা রাখে, সে যেন ৫ হাজার বস্ত্রহীন অভাবগ্রস্থ ব্যক্তিকে বস্ত্র দান করিল, ( অর্থাৎ সে ঐ পরিমাণ দানের সওয়াব লাভ করিবে)। যে ব্যক্তি এই মাসে ষষ্ঠ দিন রোজা রাখে, সে ছয় হাজার শহীদের সওয়াব পাইবে।

যে ব্যক্তি এ মাসে সপ্তম দিন রোজা রাখে, তাহার উপর দোযখের সাতটি দরজা হারাম হয়ে যায়। যে ব্যক্তি এ মাসে অষ্ট দিন রোজা রাখে, তাহার জন্য বেহেস্তের আটটি দরজা উন্মুক্ত হইয়া যাইবে। ৯ই জিলহজ্জ মানে নবম রোজা এটি সবাইকে করতে হবে। 

জিলহজ্জ মাসের কত তারিখে হজ্জ হয়

জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত সম্পর্কে ইতিমধ্যে আমরা জেনে এসেছি। জিলহজ্জ মাস মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাস আল্লাহ তায়ালার কাছে এবং মর্যাদাবান। মাস এ মাসের আমলগুলো অনেক মৌলিক আমল।
এ মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে হজ্জ পালনের নির্ধারিত করা হয়। এ মাসে মুসলমানদের দ্বিতীয় ঈদ উদযাপিত হয়। এটি হলো ঈদুল আযহা অথবা কুরবানী ঈদ বলা করা হয়। সামর্থ্য থাকলে অবশ্যই অবশ্যই কুরবানী দিতে হবে। 

শেষ আলোচনাঃ জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত সম্পর্কে জেনে এসেছি।আমরা যদি প্রকৃত মুসলমান হয়ে থাকি তবে আল্লাহ তায়ালার বান্দা হিসেবে এই আমলগুলো নিজেদের মধ্যে আনার চেষ্টা করব।

এরকম আরো তথ্য পেতে হৃদয়ের আইটি ফলো করুন। আরো এরকম তথ্য আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত প্রকাশ করা হয়। জিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমলও ফজিলত সম্পর্কে আপনাদের কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url