সুরা মুলক এর ফজিলত সম্পর্কে জানুন

সুরা মুলক এর  ফজিলত সম্পর্কে আজকের বিষয়ে আলোচনা করব। অনেকে জানেন না সূরা মুলক এর কতটা ফজিলত রয়েছে। আপনারা সুরা মুলক এর ফজিলত সম্পর্কে জানলে অনেক উপকৃত হবেন। এবং রোজ রোজ এ সুরা পাঠ করবেন।

সুরা মুলক এর ফজিলত সম্পর্কে জানুন

পোস্ট সূচিপত্রঃবিশ্বনবীর রাতে সূরা মূলক পাঠ না করে ঘুমাতেন না। পবিত্র কুরআনুল কারীমের ৬৭ তম সূরা। এ সূরা তেলাওয়াতের অনেক ফজিলত ও তাৎপর্য রয়েছে। নিচে আপনাদের সুবিধার্থে সুরা মুলক এর ফজিলত উল্লেখ করা হলো।

বিবরণ | সুরা মুলক এর ফজিলত সম্পর্কে জানুন

সুরা মুলক এটি কুরআনের কারীমে উল্লেখ রয়েছে এই সুরাটি। সুরা আল-মুলক পবিত্র মক্কায় অবতীর্ণ।কুরআনুল কারীমের ৬৭ তম সুরা আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের সূরা নাযিল করেছেন এর ৩০ টি আয়াত ও দুইটি রুকু।
যা তার তেলাওয়াতকারীকে ক্ষমা করে দেয়ার আর পর্যন্ত সুপারিশ করতে থাকে। সুরা মুলক অর্থ বুঝে নিয়মিত নিয়মিত পড়ায় রয়েছে অন্যান্য তাৎপর্য। মানুষকে গুনাহ মুক্ত জীবন দানের জন্য কুরআন সুন্নায় অনেক আমলে বর্ণনা দিয়েছেন বিশ্বনবী। লক্ষ্য একটাই যাতে মানুষ গুনাহ মুক্ত জীবন লাভ করতে পারে।

সুরা মুলক কখন পড়তে হয় | সুরা মুলক এর ফজিলত

সুরা মুলক সব সময় পড়তে পারবেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর এই সুরা মুলক পরতে পারবেন। দিনের বেলা সুরা মুলক পড়লে আপনি সওয়াব অর্জন করতে পারবেন।হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সুরা মুলক মুলক পরে ঘুমাতে যেতেন।
কিন্তু আপনারা দিনের বেলাও সুরা মুলক তেলাওয়াত করতে পারবেন। দিনের বেলা বেশি বেশি পাঠ করলে সওয়াব পাবেন। কিন্তু অবশ্যই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সুরা মুলক পরে ঘুমাবেন।

সুরা মুলক এর ফজিলত

হাদিসে একাধিক বর্ণনায় এসেছে- হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু এক ব্যক্তিকে বলেন, আমি তোমাকে এমন একটি হাদিস শুনাবো যা শুনিয়া তুমি খুশি হইয়া যাইবে।

উত্তর এসে বলল হ্যাঁ সুনান।তখন ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু বললেন, তুমি নিজে সূরা মুলক পড়ো এবংপরিবারের সবাইকে ও প্রতিবেশীকে উহার শিক্ষা দাও।

কারণ ওরা মুক্তি দানকারী ও ঝগড়া দানকারী। কিয়ামতের দিন আল্লাহর সঙ্গে ঝগড়া করে উহার তেলাওয়াতকারীকে সে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করিবে। এবং কবরের আজাব থেকে বাঁচিয়ে রাখবে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার একান্ত কামনা যে এই সূরাটি আমার প্রত্যেক উম্মতের অন্তরে গেঁথে মুখস্ত থাকুক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, কুরাআন মাজিদে ৩০টি আয়াত বিশিষ্ট একটি সুরা রয়েছে।

যা তার তেলাওয়াতকারীকে ক্ষমা করে দেওয়ার আগ পর্যন্ত তার জন্য সুপারিশ করতেই থাকবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার মন চায় প্রত্যেক মুমিনদের হৃদয়ে যেন সুরা মুলক মুখস্ত থাকে।

হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু বলেন, তোমরা সূরা মুল্ক শিখে নাও এবং নিজেদের স্ত্রী ও সন্তানদের শেখাও। এটা কবরের আজাব হতে রক্ষা করবে এবং কিয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে এই সুরা পাঠকারী পক্ষে কথা বলে তাকে মুক্ত করিবে।

বিশ্বনবী আরো বলেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মুলক তেলাওয়াতে আমল করবে সে কবরে আজাব থেকে মুক্তি পাবে।

হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু যখন কবরের পাশ দিয়ে যেতেন তখন কান্নায় উনার দাড়ি ও বুক ভিজে যেত। মানুষেরা ওনাকে জিজ্ঞাসা করতো আপনি কবরের পাশে এলে এত কাঁদেন অথচ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা শুনেও এত কান্নাকাটি করেন না এর কারণ কি।
তিনি তখন বললেন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শুনেছি কবর হচ্ছে আখিরাতের প্রথম ধাপ। যে ব্যক্তি এখানে মুক্তি পাবে তার জন্য আখিরাতের পরের ধাপ গুলো পার করা সহজ হবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, কবরের চেয়ে ভয়ংকর জায়গা আমি আর কোথাও দেখিনি। যে ব্যক্তি নিয়মিত রাতে সুরা মুলক পাঠ করিবে সে কবরের আযাব থেকে মুক্তি পাবে। 

আরেকটি হাদিসে বর্ণিত আছে যে, এ সুরা তেলয়াতকারীর আমলনামায় অন্য সুরার তুলনায় ৭০ টি নেকি লেখা হবে। এবং ৭০ টি গুনাহ মুছে ফেলা হবে।

হাদিসে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম কোন রাতে সুরা মুলক পাঠ না করে ঘুমাতেন না। আব্দুল্লাহ বিন মাউসুদ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, কবরস্থিত ব্যক্তির নিকট পায়ের দিক দিয়ে ফেরেশতারা শাস্তির জন্য আসতে চায়, তখন তার পরদয়ে বলবে আমার দিকে আসার কোন রাস্তা নেই। কারন সে সুরা মুলক পাঠ করত।

তখন তার সিনা অথবা পেটের দিক দিয়ে আসতে চাইবে, তখন তার সিনা অথবা পেট বলবে আমার দিক দিয়ে আসার তোমাদের রাস্তা কোন দিক দিয়ে নেই। কেননা সে আমার মধ্যে সুরা মূলক ভালোভাবে ধারণ করেছিল।

এরপর তার মাথার দিক দিয়ে আসতে চাইবে, তখন মাথা বলবে এদিক দিয়ে আসার কোন রাস্তা নেই।কেননা সে আমার দ্বারা সুরা মুলক পাঠ করেছিল।

সুরা মুলক হচ্ছে বাধা দানকারী কবরের আযাব থেকে সে বাধা দেবে। তাওরাতেও সূরা মূলক ছিল, যে ব্যক্তি উনারা রাত্রে পাঠ করিবে, সে অধিক পবিত্র ও উৎকৃষ্ট আমল করিবে। এছাড়াও মাউসুদ রাদিয়াল্লাহু আনহু আরো বলেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর যুগে

সূরাটিতে বাধানকারী হিসেবে আখ্যা দিতাম। ওহা আল্লাহ তায়ালার কিতাব কুরআনের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ সুরা। যে ব্যক্তি ওয়া প্রতিরাতে পাঠ করিবে সে অধিক ও উৎকৃষ্ট আমল করবে। 

সুরা মুলক মুখস্ত করার সহজ উপায়

চাই সুরা মুলক মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি। আসলে জ্ঞান নিয়ে আসা নিজের মধ্যে।আপনারা যারা সুরা মুলক মুখস্ত করতে চান তাহলে প্রতিদিন নামাজের পর পড়বেন। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার পর আপনি সূরা মূলক মুখস্ত করার জন্য পাঠ করবেন। 

পাঠ করায় আপনাদের অন্তরে এমন ভাবে গেঁথে যাবে যে আপনারা না দেখে পড়তে পারবেন। এই সূরাটা আরেকটু বড় হলেও রোদ যদি প্রত্যেক নামাজের পর পড়েন তাহলে ইনশাআল্লাহ মুখস্থ হয়ে যাবে। এ সূরার ৩০টা আয়াত প্রতিদিন আপনি যদি একটা করে মুখস্ত করেন তাহলে আপনার অন্তরে ভালোভাবে মুখস্ত হয়ে।
একেবারে নামবস্ত হলে আপনারা তিন লাইন চার লাইন করে মুখস্ত করলে এভাবে পুরোটা মুখস্ত হয়ে যাবে। আপনি যখন এই সূরা রোজ রোজ পাঠ করবেন তখন আপনার মনের ভেতরে এই সুরার উপরে আমল চলে আসবে এরপর আপনার সুরা মুলক ভালোভাবে মুখস্ত হয়ে যাবে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url