থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

আজকের বিষয় থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানাবো।এশিয়া মহাদেশে বিভিন্ন জলাভূমিতে এই গাছ জন্মে থাকে এর বৈজ্ঞানিক নাম হল সেন্টারলা এসেডিকা। যা শাক ও ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ পাতা বেড়ে ওঠার সময় মাটি থেকে সর্বোচ্চ মাত্রায় বিভিন্ন মিনারেল ও অন্যান্য উপাদান গ্রহণ করে।

থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

পোস্ট সূচিপত্রঃএ পাতাটি আমাদের সবার পরিচিত যার নাম থানকুনি পাতা। যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, আয়রন ও বিটাকারটিন পাওয়া যায়। আপনি যদি নিয়ম মেনে এই পাতাটি সেবন করতে পারেন তাহলে আপনি প্রচুর উপকারিতা পাবেন। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

থানকুনি পাতা কি

থানকুনি পাতা আমরা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকি।এর ওষুধের গুনাগুন অপরিসীম। বিভিন্ন রোগ ব্যাধি ক্ষমতা দূর করতে থানকুনি পাতা আশ্চর্যজ। এর ব্যবহার সফলভাবে হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকে। আধুনিক কালের গবেষণা এর ব্যবহার সময়ের খুব একটা বিরোধিতা করেনি বরং বেশ কিছু ক্ষেত্রে সমর্থনা করেছে।

তবে, বিভিন্ন স্টাডিজ বা গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে মূল্যবান বিসজের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। ছোট্ট এই পাতাটি মানব জীবনের স্বাস্থ্য উপকারিতাতেও অনেক সহায়তা করে। প্রাচীনকালে স্বাস্থ্যের ওষুধ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে এই থানকুনি পাতাটি। জলাশয়ের পাশে ভেজা ভুমিতে এ পাতাটি প্রচুর দেখা যায় তবে আপনি এটি ছাদে বা আঙিনায় চারা নিয়ে লাগাতে পারি। পায়ের পাতাটাকে বলা হয় থানকুনি পাতে।

থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম

থানকুনি পাতা আমাদের দেশে খুব পরিচিত ভেষজ গুণ উদ্ভিদ। রোগের নিরাময়ে থানকুনি পাতার রসের তুলনা হয় না। এছাড়াও হাত ঘূর্ণিপাতা অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে। আমাদের দেশে অনেকেই থানকুনি পাতার ভর্তা ও থানকুনি পাতা ষাঁড় হিসেবে রান্না করে খেয়ে থাকেন। এমনকি কাঁচা পাতা সালাদ হিসাবেও খাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

থানকুনি পাতাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে কেউ যদি পরিমাণে থানকুনি পাতা খেতে পারেন তাহলে একাধিক উপকার পাওয়া যাবে। থানকুনি পাতাতে অ্যামাউ এসিড, বিটা ক্যারেটিন, ফাইটো কেমিক্যাল ত্বকের অন্তরে গিয়ে কুর্তির পাশাপাশি বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। হলে সার্বিকভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় সেই সঙ্গে বয়সের ছাপ কম দেখা দেয়।

থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়মঃ

কিছু থানকুনি পাতা তুলে এনে সেটি ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। সিল পাতায় বেটে নিতে হবে অথবা ব্লেন্ডারেও ব্লেন্ড করে নিতে পারেন। এই খানকিনের পাতার পেজটি এক গ্লাস পানিতে কিছু পরিমাণ গুলিয়ে সকালে খালি পেটে খেতে হবে। এরপর দুধে দু-তিন চামচ থানকুনি পাতার পেস্ট মিশিয়ে খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয় যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বকের লাবণ্যতা বজায় রাখে।

চুল পড়াও বন্ধ হয়। অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার থানকুনি পাতা খেলে স্কালফের ভেতরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয় প্রোফালে চুল পড়া রোধ হয়। আরো ফলাফল পেতে থানকুনি পাতা ও তুলসী পাতা এবং আমলকি একসাথে পেস্ট করে চুলে কিছুক্ষণ দিয়ে রাখুন এরপর ধুয়ে ফেলুন এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার করলে দেখবেন আপনার চুল অনেক সুন্দর হয়ে গিয়েছে।

থানকুনি পাতার উপকারিতা

থানকুনি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা বউ কাল ধরে আয়ুর শাস্ত্রে ব্যবহার হয়ে আসছে। ছোট বড় বহু রোগের উপশম হয় এই থানকুনি পাতার মাধ্যমে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক থানকুনি পাতা আমাদের কি কি উপকার করে।

থানকুনি পাতার উপকারিতাঃ

১ প্রতিদিন বেশ কয়েকখানি থানকুনি পাতার রস পান করলে মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা সচল হয়। স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে সেই কারণে বাচ্চাদের থানকুনি পাতার রস খাওয়ানোর জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকে।

২ আমাশয় ও হরমোন শক্তি বৃদ্ধিতে দুই থেকে তিন গ্রাম থানকুনি পাতা চিনিসহ ২ থেকে ৩ বার সেবন করলে উপকার পাবেন।

৩ চুল পড়া ও স্নায়ুর দুর্বলতায় থানকুনি পাতার রস দুইবার সেবন করলে অনেকেই এর উপকার পাবেন।

৪ হত নিরাময়ের জন্য থানকুনি পাতার রস মধু সহ পান করতে পারেন।

৫। মুখে ঘা হলে থানকুনি পাতার রস মুখে নিয়ে গড়গড়ি করলে এর উপশম হবে।

৬ থানকুনি পাতার সাহায্যে গ্যাস্টিক ও আলসারের সমস্যা সহজেই দূর করা যায়।

৭ থানকুনি পাতা ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং এর লিভারকে সুস্থ রাখে।

৮ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে যাদের ব্লাড প্রেসার এর সমস্যা আছে তারা নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খেলে তাদের ব্লাড প্রেসার লেভেলে থাকবে।

৯ হজম ক্ষমতা উন্নত করে থানকুনি পাতা দারুনভাবে সাহায্য করে। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে থানকুনি পাতায় উপস্থিত থাকে একাধিক উপকারের উপাদান এসিডের ক্ষরণ দূর করে।

১০ ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় থানকুনি পাতায় উপস্থিত থাকে এমায়ো এসিড, বিটাক্যারোটিন এবং ফাইটো কেমিক্যাল যার ত্বকের লাবণ্য বজায় থাকে এবং তাকে যত সমস্যা তা ধীরে ধীরে দূর করে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে।

যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা

আজকে আলোচনার বিষয় যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা।প্রতিদিন থানকুনি পাতা খাওয়ার অভ্যাস করলে বড় বড় রোগের থেকে জয় পাওয়া যায়। বয়স বাড়লেও যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে এই থানকুনি পাতার রস। প্রতিদিন এক গ্লাস দুধে ছয় পাঁচ থেকে ছয় চামচ থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে মানবদেহের শরীর সতেজ ও চাঙ্গা হয়ে যায়।

থানকুনি পাতার মহা ঔষধি গুণের জুড়ি মেলা ভার।সকালে খালি পেটে খেলে এর বেশ উপকার পাওয়া যায়। প্রকৃতিতে এমন উপাদান পাওয়া যায় যার যৌবন ও তার অন্য ধরে রাখা যায়। কিন্তু এটি ধীরে ধীরে কাজ করবে তার জন্য ধৈর্য ধরে থাকতে হবে। থানকুনি পাতা পরিমাণ মতো খেলে যৌবন তরঙ্গ বৃদ্ধি পায়।

থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলে কি হয়

আমরা থানকুনি পাতার উপকারিতা ইতিমধ্যে জেনে এসেছে। এখন জানবো থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলে কি হয়। থানকুনি পাতার অনেক গুনাগুন রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না।থানকুনি পাতা প্রাকৃতিক মহা ঔষধি গুনাগুন রয়েছে এবং এটি আয়ুর শাস্ত্রে ব্যবহার করা হয়। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক তারপরে কি হয়।

থানকুনি পাতা চিবিয়ে খাওয়ার গুনাগুনঃ

  • একটি করে থানকুনি পাতা ধুয়ে মাঝেমধ্যেই খেতে পারেন যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
  • থানুকুনি পাতা চিবিয়ে খেলে যৌবন অটুট থাকে এবং তারুণ্য বজায় থাকে।
  • থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলে দাঁতের মাড়ি ফুলা ও মুখের ঘা ভালো করে দেয়।
  • থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় ও লিভার ভালো থাকে।
  • থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলে শরীরের জ্বালা-পোড়া, ক্ষত এবং ঘা দূর করতে সহয়তা করে।

থানকুনি পাতার অপকারিতা

থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা অপরিসীম থানকুনি পাতার গুরুত্ব অনেক।সব কিছু খাওয়ার জন্য একটা লিমিট রয়েছে। অতিরিক্ত কোন কিছু খাওয়া ঠিক নয়।থানকুনি পাতার যেমন উকারিতা রয়েছে তেমনি এর অপকারিতাও রয়েছে।
থানকুনি পাতা পরিমাণ মত খেতে হবে।বেশি খেলে এর ক্ষতি হতে পরে। রোজ রোজ খাওয়া যাবে না, নইলে লিভার ড্যামেজ হয়ে যাবে। মাঝে মধে খেতে হবে ও সঠিক পরিমাণ মত খেতে হবে।প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url