তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কোন দোয়া পড়লে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়
আজকের বিষয় তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কোন দোয়া পড়লে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়। তাহাজ্জুদের মাধ্যমে বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সরাসরি সম্পর্ক স্থাপিত হয়। রাতের শেষ প্রহরে আল্লাহ বান্দার প্রতি তাদের কাজের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানান। আল্লাহ বলেন কে আছো যে আমার কাছে প্রার্থনা করবে। যাতে আমি তার প্রার্থনার জবাব দিতে পারি।
পোস্ট সূচিপত্রঃকে আছো যে আমার কাছে কিছু চাইবে, যাতে আমি তাকে তার প্রার্থীতো বস্তু দিতে পারি। কে আছো যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, যাতে আমি তাকে ক্ষমা করে দিতে পারি। এজন্য বান্দা নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে আল্লাহ তাআলা তার মর্যাদা ও সম্মান বাড়িয়ে দেন। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কোন দোয়া করলে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়।
তাহাজ্জুদ এর অর্থ কি
তাহাজ্জুদ আবেগমূলক আলোচনায় বাস্তবিকভাবে অর্থ দেয় যে, সারারাত্রি উঠে নামাজ পড়া বা আল্লাহর কাছে ইবাদত করা। এটি ইসলামিক প্রথা এবং আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শ জীবন দর্শানোর একটি উপায়।
তাহাজ্জুদ নামায় সারারাত্রির মধ্যে উঠে নামাজ পড়া বলে মনে করা হয়, যা রাতের শেষ প্রত্যহ অবধি একাদশের বা বারোটায় আবদ্ধ হয়ে শেষ বারে তাহাজ্জুদ নামায় পড়া হয়। এই নামায়টি মুসলিম জীবনে ভক্তদের মধ্যে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সুপারিশ করা হয়েছে যে, আল্লাহর সাথে সাক্ষাত আত্মীয়তা স্থাপন করে এবং আত্মবিশ্বাসকে উন্নত করে।
আরো পড়ুনঃ ঘুমানোর আগে ২১ বার বিসমিল্লাহ পড়লে কি হয়
তাহাজ্জুদ নামায়ের সময় আমাদের নিজের জন্য আরজন্যতা এবং দুআ করার সুযোগ থাকে, যেটি আমাদের আত্মিক শোক, প্রার্থনা, কাজের সাহায্যের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।এছাড়াও, তাহাজ্জুদ একটি আত্মপরীক্ষণের সুযোগ হতে পারে এবং আমাদের রোল মডেল আমাদের জীবনের মাধ্যমে আমাদের আত্মসম্মান উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
তাহাজ্জুদ কত রাকাত
তাহাজ্জুদ নামাযের সময় কোন দুআ পাঠ করলে মনের ইচ্ছা পূরণ হবে, এখন জানবো
তাহাজ্জুদ কত রাকাত এই বিষয়ে। যারা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন আল্লাহ তাআলার
তাদেরকে অনেক পছন্দ করেন। তাদের মর্যাদা ও আল্লাহ বাড়িয়ে দেন এবং অনেক
সম্মানিত জায়গায় নিয়ে যাবে।
এ নামাজ আমাদের জন্য নফল। আমাদের মহানবী (স) তিনি সব সময় দুই দুই রাকাত
করে সালাতুল তাহাজ্জুদ আদায় করতেন। বিশ্বনবী দুই রাকাত পড়ে ৮ রাকাত
পড়তেন। দু'রাকাত করে মোট আট রাকাত সালাতুল তাহাজ্জুদ আদায় করতেন।
যদি আপনার সময় সুযোগ হয় তাহলে আপনি আট রাকাত পড়বেন অথবা আপনি চাইলে ৮ রাকাতের কম কিংবা বেশিও পড়তে পারেন। সালাতুল তাহাজ্জুদের মধ্য দিয়ে আল্লাহ তা'আলা আপনার সম্মান আরো বাড়িয়ে দেবে। এজন্য নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার অভ্যাস করুন।৮ রাকাত না পড়তে পারলে আপনি চার রাকাত অথবা দুই রাকাতও পড়তে পারেন।
তাহাজ্জুদ নামাজের মোনাজাত
তাহাজ্জুদের সালাত এটি বড় ধরনের এবাদত যেটার মধ্য দিয়ে মানুষ আল্লাহ তাআলার
নিকটবর্তী হতে পারে। রাতের কিছু অংশে কেউ যদি সালাতুল তাহাজ্জুদ আদায় করে আর
তাহলে আল্লাহ তাআলা মর্যাদা বাড়িয়ে দেবে। যদি সুযোগ হয় তাহলে অবশ্যই আমরা
সকলেই যেন সালাতুল তাহাজ্জুদ আদায় করি এবং নবী (স) নামাজ আদায় করতেন।
অনেকেই জানতে চান তাহাজ্জুদ নামাজের মোনাজাত সম্পর্কে আমাদের নবী (স) বলেছেন, তোমরা তোমাদের হাতের তালু গুলোকে উপরে দিকে করে আল্লাহর কাছে চাও দোয়া কর। সালাতের পর তাসবিহ পড়া সুন্নাহ। নবী (স) সকাল এবং মাগরিবের সালাতের পর লম্বা সময় ধরে তাসবিহ পড়তেন।
আরো পড়ুনঃ ফরজ গোসলের নিয়ম ও ফরজ গোসলের দোয়া
সুতরাং, আপনারা তাহাজ্জুদ সালাতের পর এবং যেকোনো সালাতের পর তাসবিহ পড়বেন।
তাসবীহ পড়া হয়ে গেলে এরপর দু'হাত তুলে আল্লাহ তা'আয়ালার কাছে মোনাজাত করে
মনের চাওয়া পাওয়া গুলো বলবেন।
তাহাজ্জুদ নামাজের সিজদার দোয়া
অনেকেই জানতে চান তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কোন দোয়া পড়লে মনের ইচ্ছা পূরণ হয় এখন আপনাদের জানাবো তাহাজত নামাজের সিজদার দোয়া সম্পর্কে। প্রতিদিন আমরা নিজের ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় গুনাহ করে থাকি। আল্লাহ তায়ালার কাছে এই দোয়া পড়ার মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারি।আল্লাহ তায়ালা এই ছোট দোয়াটি কবুল করলে নিশ্চয় আমাদের অনেক সওয়াব হবে।
এই দোয়া পড়ার অছিলায় আমাদের রিজিক বৃদ্ধি পাবে এবং আমরা হেদায়েতের পথে আসতে পারব।তাছাড়াও বলা হয়েছে কুরআন শরীফের একটি হরফ পাঠ করলে ১০টি নেকী পাওয়া যায়। এই দোয়ার মাধ্যমে আমাদের নেকীর পাল্লা ভারী হবে। তাহাজ্জুদ নামাজের সিজদাহ মাঝে দোয়া করার অনেক ফজিলত রয়েছে।
দুই সিজদার মাঝে দোয়া পড়া মুস্তাহাব কিন্তু এই দোয়া পড়ার মধ্যে ফজিলত ও
গুরুত্ব রয়েছে অত্যান্ত বেশি। আল্লাহ তায়ালার কাছে এই দোয়া পড়ার মাধ্যমে
অনেক কিছু চাওয়া হয়ে থাকে। এই দোয়াতেই বুঝতে পারা যায় এই দোয়ার পরার
মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কাছে কি চাওয়া পাওয়া হয়েছে। কারণ এই দোয়ার মধ্যে বলা
হয়েছে মাফ করুন, রহম করুন, হেদায়েত দান করুন এবং রিজিক দান করুন।
আরো পড়ুনঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে কি হয়
কারণ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ ) নিজেই এ দোয়া পড়তেন। সেজন্য আমাদেরও উচিত দুই সিজদার মাঝখানে দোয়া পড়ে পূর্ণ নিয়মে নামাজ আদায় করা। আমরা নবীজির আদর্শ পালন করব অবশ্যই, মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর দেখানো পথ অনুস্বরণ করা। হজরত ইবনে আব্বার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই সিজদার মাঝে বলতেন-
اَللّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়া আফিনি, ওয়ারযুকনি। (মুসলিম, মিশকাত)
অর্থ: হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি রহম করুন, আমাকে হেদায়েত করুন, আমাকে শান্তি দিন এবং আমাকে রিযিক দান করুন।
তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কোন দোয়া পড়লে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়
যদি কোন ব্যক্তি তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার পর দোয়াটি শুধুমাত্র একবার পাঠ
করতে পারে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার মনের অপূর্ণ সকল চাওয়া পাওয়া গুলো পূরণ
করে দেবেন। তার জীবনের ছোট বড় সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন। মানুষের
আশা-আকাঙ্ক্ষার অন্ত নেই। নেই প্রত্যাশা ও উচ্চবিলাসের সীমা। একেক সময় এক
একটা ইচ্ছা ও চাওয়া মনোজগতে উদতী হয়।
প্রতিটি মুমিন সব সময় চাইবে তার শুভ ও চাওয়া গুলো যেন পূর্ণতা পায়। তাই অপ্রান চেষ্টার পাশাপাশি মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা ও দোয়া করে। তাই তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার পর রাকাত বা চার রাকাত বা ৮ রাকাত নামাজ শেষ করার পর মনের বাসনা পূরণের জন্য দুআ পাঠ করতে হবে।
দোয়াঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বি-আন্না লাকাল হামদু লা ইলাহা
ইল্লা আনতা ওয়াহদাকা লা-শারিকা লাকাল মান্নান, ইয়া
বাদিয়াস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি ইয়া জাল জালালী ওয়াল ইকরাম। ইয়া
হাইয়্যু, ইয়া কাইয়্যুম।
দোয়াটি আপনারা খুব ভালোভাবে মুখস্থ করে নেবেন। তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার পর দু'হাত তুলে আল্লাহর দরবারে এই দোয়াটি পাঠ করতে হবে। এ দোয়াটি পাঠ করার পর দুহাত তুলে আল্লাহ দরবারে কাঁদুন এবং আপনার ইচ্ছা এবং ইচ্ছা প্রকাশ করুন।
আরো পড়ুনঃ সুরা মুলক এর ফজিলত সম্পর্কে জানুন
আমাদের মনের অপূর্ন চাওয়া পাওয়া গুলো এবং অপূর্ণ কাজগুলো পূর্ণতা পাওয়ার জন্য, রাতের বেলা দুই রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার পর এই দোয়াটি পড়ে আপনারা আল্লাহর দরবারে দোয়া করবেন। ইনশাল্লাহ, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনার মনের সকল ইচ্ছা পূরণ করবেন এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া কাজ পুনরায় শুরু করবেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নিয়মিত আমাদের এই আমল গুলো করার তৌফিক দান করুন।
আমীন
রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url