স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় - ব্রেইন ক্ষমতা বাড়াবেন কিভাবে

আজকের আলোচনার বিষয় স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় ও ব্রেইন ক্ষমতা বাড়াবেন কিভাবে। বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসের সাথে অ্যাটাস হবেন তত বেশি আপনার ব্রেইন স্মৃতিশক্তি এগুলো নষ্ট হতে থাকবে। তাই জেনে নিন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় ও ব্রেন ক্ষমতা বাড়াবেন কিভাবে।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায়

পোস্ট সূচিপত্রঃআমাদের সমাজের বাস্তবতা হলো আমাদের কোন কিছু মনে থাকে না। আজকে আর্টিকেল হলো স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় এবং ব্রেইন ক্ষমতা বাড়াবেন কিভাবে। যারা এ সমস্যায় ভুগছেন আজকে আর্টিকেলটি অবশ্যই পড়ে নেবেন আশা করি উপকৃত হবেন।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় খাবারর

আমাদের মাথায় খুব বেশি একটা কাজ করে না। এর অন্যতম একটি বড় কারণ হলো সোশ্যাল মিডিয়া।এসবই আমরা এমনভাবে যুক্ত হয়ে যাই যে স্মার্টফোনের আলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখের সাথে ব্রেনে অনেক ক্ষতি করে। তখন সেখানে তার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মনে রাখা স্মরণ করা এগুলো আসলে হয়ে উঠে না।

অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। মাথাকে মস্তিষ্ককে টেনশন মুক্ত রাখতে হবে চাপ নেয়া যাবে না। একই সাথে দুটো কাজ একসাথে করবেন না কারণ মাথায় যে মস্তিষ্ক রয়েছে সেটি একসাথে দুটি কাজ কনসিট্রেশন করতে পারে না। আজকের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় ও ব্রেইন ক্ষমতা বাড়াবেন কিভাবে এ সম্পর্কে জেনে নিন।

যেসব খাবার বাড়াবে স্মৃতিশক্তি-

  • চকলেটঃ চকলেট শুধু ছোটরা না বড়রাও খেতে পারবে। চকলেটের গুনাগুন রয়েছে অনেক বিশেষ করে ড্রাগ চকলেটে। প্রতিদিন আপনি যদি এক কাপের মাপ অনুযায়ী ড্রাগ চকলেট গ্রহণ করে তাহলে আপনার স্মৃতিশক্তি ৩০% বাড়বে। 
  • সবজিঃ সবজির মধ্যে ব্রোকলি ও টমেটো। ব্রোকলির মধ্যে রয়েছে ভিটামিন কে এবং টমেটো মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে একটি অক্সিডেন্ট। এই দুইটি উপাদান মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে মস্তিষ্ককে সবসময় সচল রাখে।
  • ডিমঃ ডিম যারা খায় অবশ্যই ডিমের সাদা অংশ খাওয়ার চেষ্টা করবেন। ডিমের সাদা অংশের মধ্যে রয়েছে কোলাইন নামের উপাদান। এটি মস্তিষ্ককে অনেক ফ্রেশ রাখে ডিমের সাদা অংশ।
  • সামুদ্রিক মাছঃ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড নামক খাদ্য উপাদান রয়েছে। এই উপাদানটি সরাসরি মস্তিষ্কের কাজ করে। সামুদ্রিক মাছ সব সময় পাওয়া যায় না তবে হাতের কাছে রুই কাতল ও ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। এই তিনটি মাছের মধ্যে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড  রয়েছে। এই ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্ককে সবসময়ের জন্য সচল রাখে। আপনার শরীরকেও রাখবে অনেক সতেজ। এই মাছগুলো খাওয়ার অবশ্যই চেষ্টা করবেন।
  • কফিঃ কফিতে থাকা ক্যাফেইন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের জন্য বেশ ভালো কাজ করে। তাছাড়া ক্যাফেইনের মধ্যে মনোযোগ বৃদ্ধি কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

স্মৃতি শক্তির ব্যায়াম

আজকের আলোচনার বিষয় স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় ও স্মৃতিশক্তির ব্যায়াম সম্পর্কে জানব। মস্তিষ্কের সবচাইতে উত্তম হলো ব্যায়াম। স্মৃতিশক্তি বাড়ানো, মেজেজ ভালো করা ও বয়সের সাথে মস্তিষ্কের ক্ষমতা রোধ কমে যাওয়া এসবের জন্য উপকার পেতে চান তাহলে আরবিক ব্যায়াম করুন। গবেষকরা বলে যেকোনো ব্যায়াম আপনার হার্টবিট ভাই এবং আপনাকে সক্রিয় করে।

আরো পড়ুনঃ কোন বয়সের মেয়েকে বিয়ে করা ভালো জেনে নিন

অ্যারোবিক এক্সারসাইজ আপনার মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। গবেষকরা বলেছে ব্যায়ামের কিছু কিছু উপকারী হাতেনাতে পাওয়া যায়। যেমন সাইকেল চালিয়ে ঘাম ঝরালে আপনার মুড কম সময়ে ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু কিছু উপকারিতা প্রকাশ পেতে টাইম লাগে। যেমন স্মৃতিশক্তির উন্নতি টের পেতে সপ্তাহ পার হয়ে যাবে। আপনার মস্তিষ্কের জন্য খুব ভালো উপকারী আসবে আরবিক এক্সারসাইজ। 

আরবিক এক্সারসাইজ আপনি নিয়মিত করবেন অন্তত ৪০ মিনিট ধরে। কি ধরনের উপকারিতা চাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে প্রতিদিন আপনি হাঁটতে বা জগিং করতে পারেন। খুব ডিপ্রেশনে ভুগছেন এমন মানুষদের ওপর করা এক পাইলট স্টাডিতে দেখা যায়, টানা ১০ দিন ৩০ মিনিট করে ট্রেড মিলে হাটা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে আনে তাদের বিষণ্ণতা। আরবিক এক্সারসাইজ তাদের সাহায্য করতে পারে মস্তিষ্কের জন্য।।

কোন ফল খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় ও কোন ফল খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে আজকে এই সম্পর্কে জানুন। আমরা অনেক মানুষই আছি ছোট থেকে বড় অনেক সময় অনেক কিছু মনে রাখতে পারি না অথবা অন্য কাজের ক্ষেত্রে ভুলে যায়। সেই জন্য আপনারা একসাথে দুই তিনটা কাজ করবেন না তাহলে ভুলে যাবেন।বয়সের সাথে আমরা অনেক কিছুই মনে রাখতে পারি না ভুলে যায়।

কিন্তু এই ভুলে যাওয়া জন্য গুরুতর মস্তিষ্কে আকার ধারণ করে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা সৃষ্টি করে, তই একে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রম বলে থাকে। বিভিন্ন কারণে স্মৃতিভ্রংশ রোগ হতে পারে। যেমন: অ্যালঝেইমার ডিজিজ, থাইরয়েড ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি, মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বাধা ইত্যাদি। গবেষকরা বলছে, আমাদের খাদ্যাভ্যাসও এর জন্য কিছুটা দায়ী। স্মৃতিভ্রংশ রোধে খাদ্যাভ্যাস বেশ ভালো সাহায্য করে।

১। কালোজাম এবং স্ট্রবেরি ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করে। এটি আপনার মস্তিষ্কের সংক্রামন আদান–প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২।  সূর্যমুখী এবং কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণে জিংক, কোলিন ও ভিটামিন ই রয়েছে। সূর্যমুখীর তেল অথবা অলিভ তেলে রান্নাতে ব্যবহার করলে  উপকারী।

৩। কলাতে রয়েছে পুষ্টিগুনে ভরপুর এটি বারোমাসি পাওয়া যায়। কলায় রয়েছে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। এটি মস্তিষ্ক স্নায়ুর ভালো কাজ করতে সাহায্য করে।

৪। কাঠবাদামে রয়েছে অনেক প্রোটিন ও ডোপামিন। এটি মস্তিষ্কের মনোযোগ ও প্রেরণা বাড়ায়। তাই এই ফলে থাকা রিবোফ্লাবিন ও এল কারনিটাইন মস্তিষ্কের নিউরোনাইল কার্যক্রমকে উদ্দীপ্ত করে।

৫।  নারকেলের পানিতে আছে গ্লুটামিক এসিড। যা এটি মস্তিষ্কের কার্যক্রম ভালো রাখে।

 নারকেলের পানিতে আছে গ্লুটামিক এসিড। যা এটি মস্তিষ্কের কার্যক্রম ভালো রাখে।

শিশুর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায়

খুব সহজ কিছু বিষয় দেখিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ক্যারেন কুইন। মেধা তীক্ষ্ণ না হলে প্রতিযোগিতার দুনিয়ায় দায়।  আজকের আলোচনার বিষয়শিশুর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় এই সম্পর্কে। সহজ ভাবে শিশুদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় গুলো কি কি জেনে নিন।

ভাবনা আর দেখার পরিবেশটা বড় করুনঃ

বিভিন্ন আকৃতির বস্তু, নানা ধরনের রং, অনেক রকমের ফলমূল ও প্রাণী দেখাতে হবে। আপনি এগুলো বই কিনে তাকে ছবিতে দেখাতে পারেন তাহলে এই সম্পর্কে শিশুর ধারণা হবে।

গুনতে শেখাঃ

খুব সহজেই বাচ্চাদের গুনতে শেখানো যায়। যেমন ধরুন বললেন, পাঁচ মিনিটের মধ্যে খাবার তৈরি হয়ে যাবে। তখন কিন্তু শিশু পাঁচ সংখ্যার সাথে পরিচিত হলো। এরপর বললেন তোমার দুটি চকলেট আছে আমার কাছে আছে তিনটি চকলেট। তাহলে আপনি শিশুকে ২ ও ৩ শিখতে পারল। আপনি যদি চকলেট হাতে নিয়ে দেখান তাহলে শিশু আরও উৎসাহ নিয়ে সংখ্যাগুলো জানবে ও গুনতে শিখবে।

সব সম্পর্কে কথা বলুনঃ

আপনার বাচ্চার সঙ্গে সম্ভব হলে সব সম্পর্কে কথা বলবে আলোচনা করবেন। তাহলে শিশুর অল্প অল্প করে জ্ঞান বাড়বে এবং এর পাশাপাশি ভাষায় দক্ষতা হবে। শিশু বেশি কথা বললেই ভালো তাদেরকে খাওয়াবেন না। কারণ কথা বলায় নিরুৎ সাহিত্য করা তাদের মেধা বিকাশের জন্য ক্ষতিকর। এক গবেষণায় দেখা গেছে যেসব শিশু কম কথা বলে, তাদের তুলনায় যেসব শিশু বেশি কথা বলতে অভ্যস্ত নিজের বুদ্ধি অন্তত ২৮ পয়েন্ট বেশি।

আরো পড়ুনঃ জানুন শিশুদের সাধারণ জ্ঞানের বিষয়

স্মৃতিশক্তি পরীক্ষাঃ

আপনি শিশুর সাথে গল্প করবেন তাকে গল্প শুনাবেন পশুপাখি রাজা রানী এগুলো শুনাবেন তাহলে শিশুর মেধা বিকাশ হবে। শিশুকে বেশি মোবাইল ফোন দেখতে দিবেন না এতে করে শিশুর মেধা বিকাশ তৈরি হয় না বরং মোবাইলে আলোতে শিশুর মেধাকে নষ্ট করে ফেলে। শিশুর সাথে বেশি বেশি গল্প করবেন ও শিশুকে বিকাল করে বাইরে নিয়ে যাবেন এতে করে বাইরে প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখলে শিশু মেজাজ ঠিক থাকবে।

শিশুর জন্য যেসব খেলনাঃ

পাজল, লেগো কাঠের তৈরি অনেক রকমের ব্লক এইসব বাচ্চাদের জন্য স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। 

শিশুর কাজঃ

শিশুকে নিজের কাপড় নিজেকে পড়তে দিন। খুব বেশি সময় লাগলে বিরক্ত হবেন না। ওকে সময় দিন ওর মত করে কম সময়ে কাজটা শেষ হতে দিন। এভাবেই শিশু রাতের খাবারের কি খেতে চায় ও কোথায় বেড়াতে যেতে চাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিন। এর ফলে শিশুর ব্রেইনে চিন্তা করা ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়বে। 

আকর্ষণীয় কাজঃ

বাসায় রং করার জন্য কাগজ তুলি রং পেন্সিল আঠা ব্রাশ এ ধরনের জিনিস রাখতে ফুলবেন না। এইসব জিনিস নিয়ে শিশু খেলতে খেলতে অনেক কাজে আগ্রহী হয়ে ওঠে। শিশুর যে কাজটির প্রতি আগ্রহ জাগে অবশ্যই তাকে সে কাজটি করতে দেবেন বাধা দেবেন না।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির দোয়া

আমাদের মধ্যে ছোট বড় সকলেই ভুলে যাওয়ার রোগটি থাকে। তাই আজকে জেনে নেন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির দোয়া। আবার অনেকেই পড়াশোনা করলে সে পড়াটা মনে রাখতে পারেন না। তো আজকে জেনে নিন কি দোয়া পড়লে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।

১। আমাদেরকে প্রতিবার নামাজের পরে বা আমরা যখনই পবিত্র অবস্থায় থাকব তখন আল্লাহর কাছে হাত তুলে বা বিনা হাত তুলে আমাদেরকে মানতে হবে চাইতে হবে দোয়ার মাধ্যমে। যেকোনো নামাজের পরে পড়বেন আল্লাহর কাছে হাত তুলে চাইবেন অথবা আপনি অন্যান্য সময়েও পড়তে পারেন। এই আমলটি আপনাদেরকে করতে হবে। এই আমলটি আপনারা সব সময়ও করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ সারা দিনের আমল সম্পর্কে জেনে নিন

দোয়া- ইয়া ফাত্তাহ, রাব্বি যিদনি ইলমা। 

২। বিশ্বনবী (সঃ) যে দোয়াটি বেশি করে পড়তে বলেছেন যাদের স্মরণশক্তি কম ভুলে যান পড়াশোনা মনে রাখতে পারেন না। তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ দোয়াটি। ফজরের নামাজের পর ডান হাত মাথায় রেখে তিন বার পড়বেন। তাহলে আল্লাহ তায়ালা স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করবেন ইনশাল্লাহ।

দোয়া- বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মাগ ফিরলি অযরিব আন্নিন হাম্মা অল হুযনা আল আযাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url