নিম পাতার ব্যবহার অপরিসীম। এটি ভষোজিগুনে ভরপুর। এটি ব্যবহারে অনেকের অনেক সমস্যা দূর হয়ে থাকে। সঠিক নিয়মে নিমপাতা না ব্যবহার করলে সমস্যা হতে পারে। তাই সঠিক নিয়মে নিম পাতার ব্যবহার জেনে নিন।
পোস্ট সূচিপত্রঃনিম পাতা আমাদের ব্যবহারিক জীবনে অতি প্রয়োজনীয়। নিম পাতার উপকারিতা ভালোভাবে জেনে বুঝে ব্যবহার করলে এর উপকারিতার শেষ নেই। আপনাদের সুবিধার্থে নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
নিম পাতার উপকারিতা
নিম পাতা একটি ওষুধি গাছ। নিম পাতা, শিকড়, গাছের ডাল, মিমের ফল ও সবই কাজে লাগে। নিম পাতা ইমিউনো উত্তেজক এর পাশাপাশি এটি কার্যকর অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে ভূমিকা রাখে। মিম একটি বহুবর্ষজীবী ও চিরহরিৎ বৃক্ষ।
ঔষধি গুনাগুন
নিমের গাছ ডাল পাতা ফল রস সবই ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশ এবং ভারতীয় উপমহাদেশে ঔষধি গাছ হিসেবে নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে গত ৫ হাজার বছর ধরে।নেমে আছে ১৩০ টি ওষুধি গুণ। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া নাশক হিসেবে নিম খুবই কার্যকর। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। আঘাত এবং ক্ষত স্থানে বা পোকামাকড় কামড়ে নিমপাতা বেটে দিলে দ্রুত সেরে যায়।
চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা
মাথার স্কিনে চুলকানি ভাব হয় এবং খুশকিও হয়। নিম পাতার রস নিয়মিত মাথায় লাগালে চুলকানি কমে যায় এবং চুল শক্ত হয় চুলের শুষ্ক থাকে কমে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এবং চুলে খুশকি থাকলে, নিম পাতা ও পরিমান মত পানি নিয়ে সিদ্ধ করুন অনেকক্ষণ পর্যন্ত। এরপর ঠান্ডা করে রাখুন। গোসলের সময় চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধোয়ার পর, এই পানি দিয়ে মাথা পরিষ্কার করোন।
নিম পাতা খেলে কি উপকারিতা
নিম খেলে রক্ত পরিষ্কার করে এবং যাদের ডাইবেটিস আছে তারাও নিম পাতার রস সেবন করতে পারেন বা পাতা চিবিয়ে চিবিয়া খাওয়া যায়। সপ্তাহে তিন দিন খেতে হবে বাকি সময় গ্যাপ দিয়ে খেতে হবে। যাদের কফের সমস্যা আছে তারা কচি পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। পেট পরিষ্কার করে এবং নাশ হয়।
এলার্জি দূর হবে নিমপাতায়
নিম পাতার রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে একটা এয়ারটাইট কন্টিনারে ভালোভাবে সংরক্ষণ করুন। এবার এক চামচের ৩ ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুড়ো ও এক চামচ ইসবগুলের ভুষি এক গ্লাস পানিতে আধাঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। আধাঘন্টা পর চামচ দিয়ে দারুন এবং সেবন করুন। এটি সকালে খালি পেটে দুপুরে ভরা পেটে এবং রাত্রে শোবার আগেও খেতে হবে এক সপ্তাহ।
এরপর যেকোনো এক বেলা খেলেই হবে। যাদের গায়ে হাতে পায়ে চুলকায় এবং ফুলে যায় তারা নিম পাতা বেটে একটি পেস্ট তৈরি করে শরীরে লাগিয়ে আধাঘন্টা ওয়েট করার পর ধুয়ে ফেলুন. এভাবে আপনি একদিন পরপর ব্যবহার করতে পারেন। এর কার্যকারিতা খুবই ভালো ফল দেবে।
ব্রণের জন্য নিমপাতার ব্যবহার
নিম একটি প্রাকৃতিক ব্লিজ যা ত্বকের ব্লিচ যা ত্বককে যেকোনো প্রবলেম দূর করে। চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে রুক্ষতা দূর করে এবং স্কিনকে উজ্জ্বল করে। নিম পাতার ফেসপ্যাক তৈরি করে তার সাথেই অল্প পরিবার হলুদ মিশে ব্যবহার করলে ব্রণ কমে যায়। নিম পাতার টোনার ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। ঘরোয়াভাবে নিমপাতার টোনার বানিয়ে ব্যবহার করা যায়।
পরিবার মত নিমপাতা ও পানি ভালোভাবে অনেকক্ষণ ধরে সেদ্ধ করে নিন এরপর সেই পানিটির ঠান্ডা হয়ে গেলে এয়ারটাইট বক্সে সংরক্ষণ করুন ব্রিজে এটি এক সপ্তাহ ব্যবহার করে আবার পুনরায় বাড়াতে হবে। এই টোনারটি সকাল দুপুর রাত যে কোন সময় আপনি ব্যবহার করতে পারেন তবে মুখ পরিষ্কার করার পর এটি ব্যবহার করতে হবে।
নিমপাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা
ত্বকের সুরক্ষার জন্য নিম পাতার ভূমিকা অনেক। ত্বকে কোন জীবাণুর সংক্রমণ হলে নিমপাতার ফোটানো পানি দিয়ে গোসল করা যায়। কয়েকদিন ব্যবহার করলে এই সংক্রমণ কয়েক দিনের মধ্যে পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়। এছাড়াও ত্বকের ঘা বা সিরোসিসের প্রকোপ কমাতে নিম পাতার বিকল্প হয় না বললেই চলে। নিম পাতা ভেজানো পাড়িতে গোসল করলে একনি এবং ব্ল্যাকহেডের সমস্যা কমে যায়।
শরীরের কোন স্থানে আঘাত লেগে কেটে গেলে তাতেও নিম পাতা ভেজানো পানি লাগালে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও নিমপাতা দিয়ে প্রতিদিন গোসল করলে শরীরের ব্যাকটেরিয়া ও গায়ের দুর্গন্ধ দূর হয়। নিম পাতা ভেজানো পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করলে চুলের ধুলা ময়লা দূর হয়।
নিম পাতার অপকারিতা
নিম পাতা অত্যন্ত শক্তিশালী ও ভষোজিগুনে ভরপুর ঔষধি। যা সঠিক নিয়মে না খেলে উপকারের বদলে ভয়ংকর ক্ষতি ঘটাতে সক্ষম। ৫ বছর কম বয়সী শিশুদের কখনো নিমপাতা দেয়া যাবে না। এ বয়সে শিশুরা নিম পাতা খেলে বমি ভাব শারীরিক দুর্বলতা মস্তিষ্কের ব্যাধি এবং মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। পিরিয়ড চলাকালীন নিমপাতা কখনো খাওয়া উচিত নয়, কারণ নিমপাতা একটি ব্লাড থিনিং রূপে কাজ করে, পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত ব্লিডিং হতে পারে।
গর্ভবতী মহিলাদের কখনোই নিম পাতা খাওয়া উচিত নয়, গর্ভাবস্থায় নিমপাতা খেলে শিশুর মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে।নিমপাতা অত্যন্ত দ্রুত হারে রক্তচাপ কমাতে সক্ষম, তাই নিম্ন রক্তচাপের সমস্যায় ভুগতে থাকা ব্যক্তিরা নিম পাতা খাওয়া এড়িয়ে চলুন। নিয়মিত নিম পাতা খেলে রক্তে ব্লাড সুগারের মাত্রা ভয়ানক ভাবে কবে যেতে পারে যা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তাই প্রতি সপ্তাহ তিন দিনের বেশি এবং দুটোর বেশি কখনো নিম পাতা খাবেন না।
রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url