গরমে সুস্থ থাকার উপায় - অতিরিক্ত গরমে কি খেতে হবে
মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়মআজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব গরমের সুস্থ থাকার উপায় অথবা গরমের সুস্থ থাকার জন্য কিছু ঘরোয়া টিপস। এই গরমে তাপমাত্রা কমছে না বরং তাপমাত্রা অনেক বেড়েই চলেছে। এক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে ছোট বড় সকলের অসুস্থতার ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
পোস্ট সূচিপত্রঃএই গরমে যে কোনো মুহূর্তে যে কেউ পড়তে পারেন অসুস্থতায়। আবহাওয়ার তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে মানবদেহের তাপমাত্রাও বাড়তে থাকে। তাই এসময়ে কেউ যদি নিজের দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার কৌশল আয়ত্ত করতে পারেন তাহলেই সম্ভব অসুস্থতার হাত থেকে রেহাই পাওয়া।
গরমে সুস্থ থাকার উপায়
আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে গরমের সুস্থ থাকার উপায় এবং অতিরিক্ত গরমে কি খেতে হবে এই বিষয়ে। আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে গরমে সুস্থ থাকার জন্য কিছু টিপস নিচে উল্লেখ করা হলো আশা করি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গরমে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে।
১. কমিয়ে আনুন শারীরিক পরিশ্রম, গরমে বেশি ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই। ব্যায়ামে বাড়বে শরীরের তাপমাত্রা। তবে শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখতে যেটুকু ব্যায়াম করবেন তা যেন সীমিত থাকে। ব্যায়ামের মাধ্যমে ঘেমে গিয়ে একাকার হয়ে ওঠার কথা ভুলে যান; বরং এ চিন্তাটা তুলে রাখুন শীতকালের জন্য। এই সময়ে খুব ভোরে হেঁটে আসুন খোলা বাতাসে কিংবা সাঁতার কাটুন কিছুক্ষণ। ব্যস, এর বেশি কিছু নয়।
২. পানি পান করুন পেটপুরে। দুঃসহ গরমে ঘামের সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় প্রচুর পরিমাণে পানি। সেই পানি পূরণ করতে আপনাকে অনেক বেশি পানি পান করতে হবে। এ ছাড়া স্বাভাবিকভাবেই গরমে দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। শরীরের কোষগুলোকে সজীব রাখতে হলে চাই পানি। শরীরে পানির অভাব হলে মাংসপেশি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তাই দুঃসহ গরমে যেখানেই থাকুন না কেন সাথে রাখুন প্লাস্টিকের বোতলভর্তি পানি।
৩. তরল খাবার বেশি খান বিভিন্ন মাংস, ডিম ও চর্বি জাতীয় খাবারের কথা ভুলে যান। তরল খান বেশি করে; দেখবেন শরীর সতেজ লাগছে বেশ। স্যুপ, ফলের রস খান। সবজি বাদ দেবেন না। শরীর থেকে ঘামের সাথে বেরিয়ে যাচ্ছে লবণ। আপনি খাবার স্যালাইন খান। ডাবের পানি, তরমুজে ভরিয়ে ফেলুন পাকস্থলী।
৪. পোশাক পরুন হালকা রঙের। গাঢ় রঙের পোশাক রোদ শোষণ করে বলে গরম অনভূত হয় বেশি। কিন্তু হালকা রঙের পোশাক রোদ যতটুকু না শোষণ করে তার চেয়ে প্রতিফলিত করে। তাই হালকা রঙের পোশাকে আপনি কেবল স্বাচ্ছন্দ্যই বোধ করবেন না, বরং এই পোশাক আপনার শরীরকে ঠা-া রাখবে। সবচেয়ে ভালো হয় সাদা রঙের পোশাক হলে। গরমে সিনথেটিক পোশাক কখনোই পরবেন না। সব সময় সুতি ও ঢিলা পোশাক পরুন।
৫. পারফিউম মাখুন দেখেশুনে : যদি গরম বেশি পড়ে তাহলে ভারী ও কড়া গন্ধের পারফিউম মাখবেন না। কড়া পারফিউমে আপনার শরীরে গরম লাগার ভাব বেড়ে যাবে। এ সময় একেবারে হালকা গন্ধের পারফিউম মাখুন। কিছু কিছু পারফিউম আছে যা মাখলে শরীরে ঠা-া অনুভূত হয়। আজই খোঁজ করুন।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয়
৬. বিরত থাকুন ধূমপান থেকে: আগে সিগারেটের অভ্যাস থাকলে ত্যাগ করুন সেটা। ধূমপানে শরীর আরো গরম হয়ে উঠবে। বাড়বে ত্বকের শুষ্কতা। বরং তার বদলে খান একটি করে ভিটামিন সি ট্যাবলেট। সজীব লাগবে নিজেকে।
৭. পরিত্যাগ করুন চা, কফি ও অ্যালকোহল। এগুলো বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে আপনার শরীরে। বাড়িয়ে দেবে পানিশূন্যতা। আপনার তৃষ্ণা মেটাতে স্রেফ পানি পান করুন। অথবা কোমল পানীয়। চা, কফি বা অ্যালকোহল একেবারেই নয়।
৮. এড়িয়ে চলুন সূর্যালোক। চেষ্টা করুন ছায়ার মধ্য দিয়ে চলতে। রোদে গেলে মাথায় রাখুন চওড়া ক্যাপ, স্কার্ফ অথবা ছাতা। রিকশায় চড়লে হুড উঠিয়ে চলুন। ত্বকে মেখে চলুন সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন। রোদে বাইরে বেরোলেই সানগ্লাস পরে নেবেন। কিন্তু খেয়াল রাখবেন সানগ্লাসটি যেন চোখের সাথে চমত্কার ফিটিং হয়। বেছে নিন ধূসর অথবা সবুজ রঙের কাচ। বাদামি রঙের কাচ হলে ভালো হয়। এই কাচগুলো সূর্যালোক প্রতিহত করবে।
৯. গোসল করুন একাধিক বার : সবচেয়ে ভালো হয় যদি ঠান্ডা বাথটাবে চুপচাপ শুয়ে থাকেন এবং মাঝে মাঝে সেখানে ছুড়তে থাকেন হাত-পা। তা সম্ভব না হলে দিনে দু’তিনবার গোসল করুন। শরীরে তেলজাতীয় কিছু মাখবেন না। সময় একটু বেশি নিয়ে গোসল করুন।
১০. শুয়ে পড়ুন মেঝের ওপর : ফোমের বিছানা কিংবা জাজিম, তোশক গুটিয়ে রাখুন। ভালো করে ধুয়ে মুছে সটান করে শুয়ে পড়ুন মেঝের ওপর। আপনার কোমরে কিংবা পিঠে ব্যথা থাকলে তো সোনায় সোহাগা। গরম তাড়ানোর পাশাপাশি ব্যথার চিকিৎসাও হয়ে গেল। মেঝের শীতল অনুভূতি শীতল করে তুলবে আপনার শরীরকে। চমৎকার ঘুম হবে আপনার। মাথার ওপর অবিরাম ছেড়ে রাখুন ফ্যান। দেখবেন গরম কোথায় পালায়।
গরমে ঠান্ডা পানি কেন খাবেন না
অনেক গরমে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। হঠাৎ করে যদি অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করা হয় তাহলে দেহের কিছু অংশের তাপমাত্রা হঠাৎ করে কমে যাবে। তখন বাইরে তাপমাত্রার সঙ্গে শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়।
আরো পড়ুনঃ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায়
যেমন ধরুন হঠাৎ করে যদি ঠান্ডা পানি অতিরিক্ত পান করা হয় তাহলে সর্দি-কাশি জ্বর অথবা মাইগ্রেনের সমস্যা দাঁতে ব্যথা খাদ্যনালির সমস্যা ইত্যাদি এসব ঝুঁকি বেড়ে যায়। যদি ঠান্ডা পানি খেতে চান তাহলে নরমাল পানির সঙ্গে আপনাকে অল্প পরিমানে ঠান্ডা পানি মিশিয়ে খেতে হবে তাহলে শরীরের সমস্যা হবে না।
এই গরমে কতটুকু পানি খাওয়া উচিত
আজকে আলোচনা বিষয় গরমে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে ইতিমধ্যে আমরা আলোচনা করে এসেছি। অতিরিক্ত তীব্র গরম পড়েছে তাই ছোট বড় সকলকেই লিকুইড খাবার খেতে হবে এবং এর সাথে পরিমাণ মতো পানি খেতে হবে। একবারে অতিরিক্ত পানি খেলে চলবে না কিছুক্ষণ পরপর অথবা কয়েক ঘণ্টা পরপর পানি পান করতে হবে। যেমন প্রতিদিন বড়দের ক্ষেত্রে তিন থেকে চার লিটার পানি খাওয়া খুবই জরুরী। আর যাদের কিডনি হাট অথবা লিভারের সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পানি খেতে হবে।
অতিরিক্ত গরমে কি খেতে হবে
অতিরিক্ত গরমে ছোট বড় সকলেই অনেক ঘেমে যায়। এই ঘামার কারণে সকলেই অনেক শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই সুস্থ রাখতে অবশ্যই লিকুইড খাবার খেতে হবে এ সময় ভিটামিন সি সমৃদ্ধযুক্ত টক ফল এবং সবজি যেমন কমলা মালটা আনারস পেয়ারা ক্যাপসিকাম বেশ ভালো দেহের জন্য কাজে দেয়। আবার অতিরিক্ত গরমে দেখা যায় যে সর্দি কাশি গলা ব্যথা হয়ে থাকে। তাই হালকা গরম স্যুপ গ্রিন টি আদা চা হার্বাল যা তুলসী চা এগুলো খেলে সর্দি-কাশি অথবা গলা ব্যথা থেকে নিরাময় করে।
রেদওয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url